ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নারী পাচার ও ভবিষ্যৎ

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০১৮ ১৮:৫২

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০১৮ ১৮:৫২

 


শুধু মহিলা অধিদপ্তর নয়, আছে পৃথক মন্ত্রণালয়। সারাদেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে আছে স্বতন্ত্র অফিস।। প্রত্যেকটা স্থানীয় সরকারে আছে নারী, তবু কেন অপমান!!!
যে দেশে আছেন মহিলা মন্ত্রী, পার্লামেন্টের মহিলা স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা মহিলা সর্বোপরি বিশ্বের প্রভাবশালী নারী, মানবতার মা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী সেদেশের নারী পাচারের শিকার হয়! যেদেশে মহিলা রাজনীতির মূল স্রোতে আছে দল, যে দেশের রাজনীতিতে পুরুষের পাশে দাপটের সাথে আছে নারী নেতৃত্ব, যে দেশে বিচারক, প্রশাসক, পুলিশ ও আইনজীবী আছেন অসংখ্য নারী সেদেশের নারী পাচার লজ্জাজনক। যেন কেউ দেখেও দেখে না। যে দেশে নারীদের বিনা খরচে শিক্ষা লাভের সুযোগ আছে, যেখানে কর্মসংস্থান আছে, যেখানে আছে সরকারি ভাতা আছে অনেক বেসরকারি নারী কলাণমূলক কাজে জড়িত এনজিও সে দেশের নারী পাচার হওয়া অবাক করে। 
বাংলাদেশ সুরক্ষিত সীমানাবেষ্টিত দেশ হওওয়া সত্বেও সাগর পথে মানব পাচার বিশেষ করে নারী পাচারের ঘটনা ঘটছে। আবার ইমিগ্রেশ ক্রস করেও চলছে নারী পাচার। খেলোয়াড় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করার আড়ালেও আছে নারী পাচার। দেখা যাচ্ছে সমাজের সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি, প্রশাসন ও পুলিশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এসব নারীরা পাচার হয়ে যাচ্ছেন। ট্যুরিস্ট বা স্টুডেন্ট বা ভুয়া ওয়ার্ক ভিসায়্অও পাচার হচ্ছেন নারীরা। এসব সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ। গিভীরভাবে ক্ষতিয়ে দেখলে সব উন্মোচন হবে। বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিতে এগিয়ে যাচ্ছে যে গতিতে সে গতি প্রশ্নবিদ্ধ হবে যদি না মানব মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা যায়। উন্নতির সাথে সাথে মানুষ মর্যাদা খোজে সে মর্যাদা না পেলে উন্নতির উলটা গতি তথা হতাশা ও দেশ ত্যাগের হিরিক পরে। তাই এসব দিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে। 
মানবী পাচারের কিছু নমুনা শোনা গেছে যেমন, একজন মধ্যবয়সী নারী স্বামীকে না বলে গান করার উদ্দেশ্যে বিমান বন্দরে গেছেন, তিনি ডোমেস্টিক রুটে অন্য এক শহরে যাবেন। কিন্তু একসময় নিজেকে একটি দেশের শহঅরে আবিস্কার করলেন। তাঁর বক্তব্য তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়েছেন কিছুই জানতেন না। এখন তাকে প্রতিদন অনেক পুরুষের সাথে বিছানায় যেতে হচ্ছে। নিজে উদ্ধার হলেও দেশে স্বামী সন্তানের নিকট এ কলংকিত মুখ দেখাতে চান না। তাঁকে অচেতন অবস্থায় কিভাবে ঢাকা ও আরেকটি দেশের ইমিগ্রেশন ক্রস করানো হলো? নাকি সে মিথ্যা বলছে? 
উঠতি বয়সী মেয়ে মোবাইল ফোনের সূত্রে পরিচয় প্রবাসী যুবকের সাথে ক্রমে ক্রমে প্রেমের সম্পর্ক হলে একদিন ঘর ছেড়ে বেড় হয় সে। পাসপোর্ট করে কিন্তু ভিসা নাই। তাতে কি ওরা এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্ট করে ওকে নিয়ে যায় ফ্রি ভিসার দেশে। এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনে জিজ্ঞেস করেছিল কি না? না কিছুই জিগায় নি। কন্ট্রাক ছিল নাকি তাই। অতঃপর অন্যদেশে নিয়ে আরেকজনের কাছে হস্তান্তর করে, সে নিয়ে যায় সেই প্রেমিকের কাছে, প্রেমিক তাকে বাধ্য করে দেহপসারিনি হতে। পরে সব বুঝতে পারে কিন্তু এ লজ্জার মুখ আর শতপুরুষের লালসায় রক্তাক্ত দেহ নিয়ে কিভাবে যাবে! 
একজন প্রথিতযশা শিল্পীকে অতিসহজেই বিশ্বাস করে অন্যশিল্পিরা তারা দলেবলে চলে বিদেশ কিন্তু সংগে কিছু অচেনা আনকোরা মুখ ভাবিয়ে তোলে। আশংকা সত্যি হল যখন মাঝরাতে পুলিশ এসে রেইড দিয়ে কিছু অবৈধভাবে আসা লোকদের ধরে নিয়ে যায়, গ্রেফতার করে সেই প্রথিতযশা শিল্পীকে, ক্রমে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসে তিনি আগে থেকেই এব্যবিসা করে অনেক লোক পাচার করেছেন! যার জিও করে নেন মন্ত্রণালয় থেকে। যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
একইভাবে অনেক অখেলোয়াড়কে খেলোয়ার সাজিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে জিও করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব পাচার করা হয়। 

কাজের আশায় ঢাকা আগমন সেখানে কালক্রমে পরিচয় হয় দালালের সাথে সে বলেছিল চার লাখ টাকা দিলেই বিদেশ। দরদাম করে সারে তিন লাখে ঠিক হয়। স্বামী সন্তান সংসার ফেলে রাতের আঁধারে দালালের হাত ধরে নিরুদ্দেশে পা ফেলে। প্রথমে নৌকা, তারপর ট্রলারে চরে আরেক দেশে যায়। সেখান থেকে আরেক দেশে প্রবেশের সময় গ্রেফতার হয় দু নারী। তারা এখন জেলে আছে। আর বাড়িতে মা মা করে কান্না করছে শিশু!! 
যেভাবেই হোক এসব নারীপাচারকারীদের পিছনেও রয়েছে নারী। জাতীয় মহিলা পরিষদ হোক নারী পাচারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান যার সাহায্যে এগিয়ে আসুক নারী এনজিও, নারী বিচারক, নারী পুলিশ, নারী প্রশাসক, নারী রাজনীতিক, নারী মন্ত্রী, নারী স্পিকার এবং প্রধানমন্ত্রী। সুরক্ষিত হোক নারী ও মা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: