
আজ সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নায় বরং বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য গড়ার জন্যই আমার রাজনীতি।
আমার তো হারাবার কিছু নেই। বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি। বাংলাদেশের জনগণ, যে জনগণের জন্য আমার বাবা সারা জীবন কষ্ট করেছেন। জোর-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। নিজের জীবনটা পর্যন্ত দিয়ে গেছেন। সেই জনগণের ভাগ্য গড়াটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। তাই দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।
২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। ঠিক একই কার্যক্রম শুরু করতে চেয়েছিল সাম্প্রতি পল্টনে। তিনি বলেন, ‘এই মানুষ হত্যা করায় ছিল তাদের কাজ। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রতিরোধ করে। নির্বাচন হয় আমরা জয়ী হয়ে সরকার গঠন করি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পর পর দুবার একটানা ক্ষমতায় ছিলাম বলে আজকে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। মানুষের জীবন মান বদলেছে, মানুষের জীবন উন্নত হচ্ছে, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে, পড়াশুনা করছে, স্কুলগুলোর উন্নতি করেছি।মানুষের ভাগ্য আমরা গড়ে তুলছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে আপনারা আবার নৌকাকে বিজয়ী করুন। আমি বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই দেশের জন্য আমার বাবা জীবন দিয়েছিল। প্রয়োজনে আমিও দেব, তবুও দেশকে কোন রাজাকার, সন্ত্রাস, যুদ্ধ অপরাধীর হতে তুলে দিতে চাই না। যারা দেশের ক্ষমতাকে অন্যের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল, তারা আর কি উন্নতি করবে দেশের।
আপনারা এখন সচেতন হয়েছেন।আসন্ন নির্বাচনে উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজগুলোকে সমাপ্ত করতে নৌকাকেই জয়যুক্ত করুন। কেননা আপনারা জনেন নৌকা মানেই উন্নতি, নৌকা মানেই শান্তি।
আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। আমরা ২১০০ সাল পর্যন্ত ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করেছি। ২১০০ সালে বাংলাদেশ কেমন হবে তার জন্য আমি এখন থেকেই কাজ শুরু করেছি।
শিক্ষাক্ষেত্রের উন্নতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে আমরা এখন অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। ঠিক সময়ে এখন রেজাল্ট হচ্ছে। আমরা বিনা পয়সায় বই বিতরণ করছি, বৃত্তি দিচ্ছি। শিক্ষকদের আমরা ট্রেনিং দিচ্ছি।
শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, অনেকে এসব জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার বিরুদ্ধে কথা বলে। তবে এসব পরীক্ষা হওয়ার ফলে ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভীতি কেটে যাচ্ছে। তারা পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এবারের পরীক্ষার ফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এবারের শিক্ষার ফলাফল যথেষ্ট ভালো হয়েছে। ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করলে ফলাফল আরও ভালো হবে। যারা পাস করতে পারেনি তাদের বলবো মন খারাপ না করে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে। যাতে তারা পরবর্তীতে বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে , আমি দেখলাম শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান পড়তে চায়। আমি ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আসি। এরপর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা কম্পিউটার নিয়ে আসলাম। এখন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে বসেই ভিস্যুয়াল সব কিছু দেখতে পায়।
মাদরাসা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কওমি মাদ্রাসা এতদিন দূরে ছিল। এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমরা এখন স্বীকৃতি দিয়েছি। তাদের জীবন-জীবিকার যাতে একটা ব্যবস্থা হয় সেই সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: