ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়ে বিচারকের আসনে

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯ ১৮:০৫

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯ ১৮:০৫

 

তার বেড়ে ওঠা ভারতের কোনো এক নিষিদ্ধ পল্লীতে। মা তার যৌনকর্মী। এখানেই শেষ নয়; হঠাৎ একদিন দেখলেন তিনি পুরুষ নন, দিন দিন নারী হয়ে উঠছেন।এভাবেই একদিন রূপান্তরকামী হয়ে উঠলেন। আর সেই নিষিদ্ধ পল্লীর রূপান্তরকামী একদিন বসলেন আদালতের বিচারকের আসনে।গত ৯ মার্চ এমন অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে ভারতের হুগলি জেলার চার মহকুমায় শ্রীরামপুরে লোক আদালতে। এই বিচারকের নাম সিন্টু বাগুই (২৭)।

একজন রূপান্তরকামীর আদালতে বিচারকার্য পরিচালনা করা হয়তো ভারতে এটিই প্রথম। যে কারণে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে চর্চাও হয়েছে।গর্বিত সিন্টু বাগুই নিজেই তা প্রকাশ করলেন, ‘যৌনকর্মীর সন্তান এবং রূপান্তরকামী হিসেবে সম্ভবত আমিই প্রথম এই দায়িত্ব পালন করলাম। এভাবেই এগিয়ে যাব। সমাজের উপকারে আসব।’খুব ভালোভাবেই জমে থাকা কিছু মামলার নিষ্পত্তি করেছিলেন সিন্টু। এমনটিই জানিয়েছেন দায়িত্বরত সচিব অনির্বাণ রায় ও আইনজীবী অংশুমান চক্রবর্তী।

শনিবার আদালতে কিছু লঘু অপরাধ এবং মামলার পূর্বাবস্থায় থাকা বিষয়ের নিষ্পত্তি করেন বিচারক সিন্টু।সচিব অনির্বাণ রায় জানান, ওই বেঞ্চে প্রায় আড়াইশর বেশি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে সেদিন। সিন্টু অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।সিন্টুর বিষয়ে তিনি আরও বলেন, একজন যৌনকর্মীর সন্তান এবং রূপান্তরকামী যে সমাজের মূলস্রোতেও ব্যাপক সাফল্য আনতে পারেন, সেটি করে দেখালেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের রূপান্তরকামীদের আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী সিন্টু। তিনি একজন সমাজকর্মী।সম্প্রতি হুগলি জেলা আইনি পরিসেবা কর্তৃপক্ষের (ডালসা) পক্ষ থেকে সমাজকর্মী হিসেবে সিন্টুকে বিচারকের আসনে বসার প্রস্তাব দেয়া হয়।বিচারকার্যে সিন্টুকে সহায়তাকারী আইনজীবী অংশুমান চক্রবর্তী বলেন, ‘বিচারকের আসনে বসে সিন্টুর মধ্যে কোনো আড়ষ্টতা দেখিনি। সুযোগ পেলে তিনি এই পেশায় ভালো করবেন বলে মনে করছি।’বিচারকার্য শেষে সিন্টু তার মাকে স্মরণ করেন। সাত বছর আগে সিন্টুর মা মারা গেছেন।সিন্টু বলেন, ‘মা বেঁচে থাকলে আমার এমন সাফল্যে খুশি হতেন।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: