ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

তিন শ আর বাধা নয়

Akbar | প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০১৯ ০৮:৪০

Akbar
প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০১৯ ০৮:৪০

 

ঢাকা: নিজে এর ভুক্তভোগী বলেই বিশ্বকাপ সামনে রেখে হাবিবুল বাশারের এ রকম প্রার্থনা অস্বাভাবিক কিছু নয়, ‘এ রকম অনেক নজির আছে যে বিশ্বকাপে গিয়ে দলের মূল খেলোয়াড় ফর্ম হারিয়ে ফেলেছে। আশা করি, আমাদের ক্ষেত্রে সে রকম কিছু হবে না।’

২০০৭ বিশ্বকাপে গিয়ে ফর্ম হারিয়ে ফেলা হাবিবুলের আরেকটি চাওয়াও আছে, ‘আচমকা কোনো ইনজুরিতে যেন কেউ না পড়ে যায়।’ এই দুটি ব্যাপার না ঘটলে বাংলাদেশের জন্য ইংল্যান্ডে দারুণ এক বিশ্বকাপই অপেক্ষা করে আছে বলে মনে করেন এই নির্বাচক।

অবশ্য একই সঙ্গে একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার বাস্তবতাও ভুলে যাচ্ছেন না তিনি। একেই এবারের ফরম্যাট অন্যান্য বিশ্বকাপের মতো নয় যে গ্রুপ পর্ব থেকে কয়েকটি ম্যাচ জিতেই এগোনো সম্ভব। এবার খেলা সব দলের সঙ্গে সব দলের। খেলাও হবে লম্বা সময় ধরে। দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবাহিকতা রক্ষার ব্যাপার যেমন আছে, তেমনি বিশ্বকাপ বলে ইংল্যান্ডের উইকেটও হওয়ার কথা ব্যাটিং সহায়ক। আর ইদানীং ওয়ানডেতে ৩০০-৩৫০ রান যেমন হরহামেশাই হচ্ছে এবং সেই রান তাড়া করে জেতার ঘটনাও কম নয়। এ রকম উত্তুঙ্গ চাহিদা মেটানোর মতো দল নিয়ে কি বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

হাবিবুলের মতো দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও মনে করেন সেই চাহিদা মেটাতে সক্ষম মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। সে জন্য সব শেষ বিপিএল শিরোপাজয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কোচ সালাউদ্দিনের জুড়ে দেওয়া শর্তটি হচ্ছে, ‘প্রতিপক্ষ তিন শ করলেও আমাদের তাড়া করে জেতার ক্ষমতা আছে। ওরকম রান হয়ে গেলেও বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়বে না। কারণ মুশফিক-তামিম-সাকিব-রিয়াদরা আছে। তবে ওরা রান করলেই হবে না, এ ক্ষেত্রে তরুণদেরও সমর্থন লাগবে। ইংল্যান্ডে সৌম্য-লিটন-সাব্বিররাও ভালো করবে বলে বিশ্বাস। কাজেই ওয়ানডেতে এখনকার ঘরানার সঙ্গে তাল মেলানোর মতো দল নিয়েই আমরা যাচ্ছি।’

প্রতিটি দলের একে অন্যের মুখোমুখি হওয়ার ফরম্যাটের কিছু সুবিধার দিকও দেখছেন হাবিবুল, ‘এটি ঠিক যে এবারের বিশ্বকাপ আমাদের সামর্থ্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে ছাড়বে। তবে ফরম্যাটের একটি সুবিধা হলো প্রথম কয়েকটি ম্যাচে খারাপ করলেও আপনার ফিরে আসার সুযোগ থাকবে। তা ছাড়া আমাদের পর পর ম্যাচও নেই। কাজেই ছেলেদের রিকভারির সুযোগও বেশি।’ আবার এটিও তাঁর অজানা নয় যে, ‘নতুন ফিল্ডিং আইনের কারণে ৩০০-৩৫০ রান এখন খুব নিয়মিত ব্যাপার হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিশ্বকাপের উইকেটও ভালো থাকবে আশা করি। কাজেই এবার সিংহভাগই হাই স্কোরিং ম্যাচ দেখতে পাওয়ার কথা।’

প্রতিপক্ষ বিশাল কোনো স্কোর তাড়ায় নামিয়ে দিলেও যে ভড়কে যাবে না বাংলাদেশ, দলটির অভিজ্ঞতাই সে ভরসা দিচ্ছে হাবিবুলকে, ‘এবারই সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল নিয়ে আমরা বিশ্বকাপে যাচ্ছি। ওদের সঙ্গে ২০১৫ বিশ্বকাপে তরুণ যারা ছিল, তারাও প্রায় সবাই এবার থাকছে। আশা করি সবাইকে ফর্মেই পাব। সে ক্ষেত্রে আমাদের খুব ভালো সুযোগ আছে। ছেলেরা সেরা ফর্মে থাকলে ৩০০-৩৫০ রান করাও সম্ভব, আবার তাড়া করে জেতাও সম্ভব।’ এ যাবত বাংলাদেশের সেরা বিশ্বকাপও সম্ভব বলে মনে করছেন হাবিবুল, ‘সবচেয়ে অভিজ্ঞ বিশ্বকাপ দল আমাদের। এই দল কিন্তু পরের বিশ্বকাপেও পাব না আমরা। এমন দল আছে বলে এবারই আমাদের সেরা বিশ্বকাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

গতবার খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা বিশ্বকাপ। সেটিকে ছাপিয়ে যেতে তো সেমিফাইনালে ওঠা চাই। মুখ ফুটে সেই কথাই বলে দিলেন সালাউদ্দিন, ‘লম্বা সময় ধরে হওয়া টুর্নামেন্টের সুবিধা হলো অনেক দল দেরিতে হলেও ছন্দটা ধরতে পারে। মানে ফিরে আসার সুযোগ থাকে। বাংলাদেশেরও সেই সুযোগ থাকছে। তা ছাড়া ওয়ানডেতেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অভ্যস্ত। ছেলেরা ওয়ানডেটা বেশ ভালো বোঝেও। এবার খেলোয়াড়রাও অনেক বেশি অভিজ্ঞ। অন্যান্য দলের সঙ্গে তুলনায় আমরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ দলই। আমার কাছে তাই বাংলাদেশকে সেরা চারে যাওয়ার মতো দলই মনে হচ্ছে।’

কারো কাছে তা মনে হলেও করে দেখানোর চ্যালেঞ্জটিও ক্রিকেটারদের সামনেই থাকছে। এবার যে ওয়ানডের বর্তমান ঘরানোর সঙ্গে তাল মেলানোর বাড়তি চ্যালেঞ্জও আছে। যে চ্যালেঞ্জ ৩০০-৩৫০ রান করার কিংবা তাড়া করার!



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: