ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট দেশের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত

odhikar patra | প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৯ ২২:১২

odhikar patra
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৯ ২২:১২

 

যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। যুবলীগের মহানগর শাখার একটি অংশে-সভাপতি হয়েও সারা দেশে যুব সমাজের ‘আইকন’ হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে দল ক্ষমতায় এলেও বরাবরই থেকেছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে, এড়িয়ে চলেছেন গণমাধ্যমকে। জানার চেষ্টা করে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনের অজানা অনেক কথা। তার সেসব অজানা কথা তুলে এনেছেন যা দর্শক ও পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

: গ্লোবাল টিভি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগত। দল আপনাকে কতটুকু মূল্যায়ণ করেছে এবং আপনি তাতে কি সন্তুষ্ট ?

: দল আমাকে অবশ্যই মূল্যায়ন করেছে এবং দলের প্রতি আমিও সন্তুষ্ট। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দর্শনকে অনুসরণ করি। ব্যক্তিগত চাওয়া আমাকে কখনো আনন্দ দেয় না। আমার সবচেয়ে বড় আনন্দ আমি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার একজন কর্মী, বঙ্গবন্ধুর একজন সৈনিক। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, চেষ্টা করি ওই দায়িত্বটুকু যথাযথভাবে পালন করতে।

 : বিগত নির্বাচনে আপনি ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু দল থেকে ওই আসনে রাশেদ খান মেননকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি ?

 : আমি কখনো বলিনি নির্বাচন করবো। তবে আমার হাজার-হাজার নেতাকর্মীর প্রাণের দাবি ছিলো। এক সময় আমি অসহায়ের মতো তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলাম। ওদের দাবি ছিলো, ‘আপনি সংসদ সদস্য হবেন। আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে জাতীয় সংসদে কথা বলবেন।’ দেখুন, আজকে কিন্তু ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। দেশ বাঁচানোর জন্য রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তি নিয়ে (১৪ দল) মহাজোট করে সরকার গঠন করেছেন। দেশের স্বার্থে যেকোন ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জন্য। 

 : ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনে বড় একটি অংশে আপনার নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে ঈর্ষার দাবি রাখে। সেই হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মতো। এই যে যুবসমাজকে সংগঠিত করা, এর নেপথ্যে কি শক্তি কাজ করেছে ?

: নেতৃত্বে কারা থাকবে তা তাদের আন্তরিকতা ও কর্মীদের মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করে। ছাত্র কিংবা যুব সংগঠনের যারা দায়িত্ব নিবে তাদের প্রথমেই সেই উদ্দেশ্যটা সফলভাবে পালন করতে হবে। তাহলেই অনেকটা সহজ হয়। তবে দায়িত্ব দেয়ার আগে দলের হাইকমান্ড থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়, তুমি দলীয় কর্মী, তোমার কাজটি হবে কর্মীকে মূল্যায়ণ করা। কর্মীর খোঁজ-খবর রাখা, গ্রুপিংয়ের উর্ধ্বে উঠে নেতাকর্মীকে ভালোবাসা এবং দলকে সুসংগঠিত রাখা। আমি ওই চেষ্টাটা করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের জননন্দিত এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অনেক আস্থাভাজন যুবলীগের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. ওমর ফারুক চৌধুরী। বাংলাদেশের সব ইউনিটের চাইতে তিনি এ ইউনিটটিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেছেন। একটি তৃণমূলের সম্মেলন হলেও সেখানে তিনি তাঁর উপস্থিতি দিয়ে ওই কর্মীদের কাছে আমাদের মহানগর দক্ষিণকে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন। আমি মনে করি এটা অনেক বড় একটি ভূমিকা।

আপনি যখন যুবসমাজের জন্য কাজ করবেন, তাদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করবেন তখন কিন্তু অবশ্যই যুবসমাজ আপনাকে বিশ্বাস করবে। একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় যদি নেতৃত্ব নিয়ে যেতে না পারেন তাহলে আপনি যত সংগঠনই করেন, যত পরিশ্রমই করেন, সেটা সফল হবে না। আমরা মনে করি, আমাদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা আমাদের সফলতার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

: কিভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হলেন ? তখন আপনার বয়স কত ?

 : আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের বংশে আরো দু’জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমার চাচাদের দু’জনকে ধরে নিয়ে একজনকে দিয়ে আরেকজনকে হত্যা করিয়েছিলো। সেটি অনেক বড় কাহিনী, এত অল্প সময়ে বলা যাবে না। ওই সময় আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটি ছিলো। রাজারবাগ ইউনিয়ন কমিটি। এই ইউনিয়নে ৭/৮টি থানা ছিলো। ওই সময় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আমার বাবা। পরবর্তীতে সহ-সভাপতি ছিলেন।

রাজারবাগ-রমনা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা আমার বাবা। আমি যখন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তখন ছাত্রলীগের স্কুল ক্লাস কমিটির সভাপতি হয়েছিলাম। আর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা বলতে পারেন আমরা। এরপর রমনা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হলাম। পরবর্তীতে থানা যুবলীগের আহ্বায়ক, মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পদক ছিলাম দীর্ঘদিন। এভাবেই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া।

বাবার মুখে শুনেছি বঙ্গবন্ধুর গল্প, মুক্তিযুদ্ধের গল্প। রাত ৩টা-৪টায়ও আওয়ামী লীগের শত শত মানুষ বাসায় আসতো। মা তাঁদের জন্য রান্না করতেন। পরবর্তীতে মায়ের কাছে শুনেছি, বাবার ত্যাগের কথা। সেই জিনিসটাই আমাদের ভাই-বোনদের মধ্যে আদর্শ হিসেবে কাজ করেছে। বঙ্গবন্ধুই এদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধুই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বঙ্গবন্ধুই জাতির পিতা। বাবা-মা’র কাছ থেকে পারিবারিকভাবেই রাজনীতির শিক্ষা নেওয়া।

: দেশে যারা রাজনীতি করেন তারা মিডিয়ায় নিজেদের প্রচারণা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। অথচ আপনি প্রচারবিমুখ, এর কারণ কি ?

 : যদি সহজভাবে বলি, আমি কি প্রচার করবো, আমাকে কি উপস্থাপন করবো ? এদেশে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার চাইতে কেউ বেশি জনপ্রিয় ? কার বেশি অবদান ? এদেশে শেখ হাসিনার চাইতে কার বেশি ত্যাগ ? তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টে মা-বাবা-ভাই-বোন সবাইকে হারিয়েছেন। আমি মনে করি, যে সংগঠন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, তার দর্শন নিয়ে কাজ করে সেখানে আমাদের প্রচারের কিছু নেই। আমি এতটুকু বলতে পারি, প্রত্যেক নেতাকর্মী বিশ্বাস করে যে বাংলাদেশে সবচেয়ে নন্দিত, সবচেয়ে জনপ্রিয়, বিশ্বের সবচেয়ে মানবতাবাদী নেতা শেখ হাসিনা। আমরা তাঁর প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের মিডিয়ায় আসার নিজস্ব কোনও ইচ্ছা নেই। 

: একটি বড় দলের যুব সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে নিশ্চয়ই প্রতিনিয়ত আপনাকে বড় ধরণের ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। কিভাবে এ অর্থের যোগান দেন ?

 : আওয়ামী লীগের ব্যয় সব সময় কেন্দ্রীয় কমিটি বহন করে। যুব সংগঠনের ব্যয় সংগঠনের চেয়ারম্যানই করে থাকেন। একটি ফান্ড আছে, কর্মসূচি আসলে ওই ফান্ড থেকে থেকে সহযোগিতা করা হয়। পাশাপাশি আমরা যুবলীগ দক্ষিণ অনেকগুলো মানবিক কাজ করি। সেগুলো হলো, যে সমস্ত অঞ্চলে নেতাকর্মীরা অসুস্থ হয়, তাদের পাশে দাঁড়াই। এছাড়া কারো বাবা, মা, ভাই যদি নিহত কিংবা শহীদ হন। আন্দোলন করতে গিয়ে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হন তাদের খবর আমরা নিই। যুবলীগের কোনও কর্মী যদি মারা যান আমরা ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াই।

আমাদের ব্যয়টা একটু বেশি। ব্যয়টা হচ্ছে সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য। আমার ১৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রত্যেকই এ ব্যাপারে উদার। একজন নেতাকর্মী যদি কোন কাজে ৫০ হাজার টাকা দেয় তাহলে একটি বড় ধরণের প্রোগ্রাম করতে সমস্যা হয় না। 

: আপনার প্রিয় ব্যক্তি কে ?

: আমার মা।

 : প্রিয় খাবার ?

 : প্রিয় খাবার টোস্ট-বিস্কিট। কারণ, সারাদিন আমার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থাকি। এ সময় চা-বিস্কিটের ওপরই থাকি। 

: আপনার অবসর সময় কিভাবে কাটে ?

 : সারাদিন তো নেতাকর্মীদের সঙ্গেই থাকি। অবসর পাওয়ার সুযোগ খুবই কম। যেটুকু পাই তা ঘুমিয়েই কাটাই।

: আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি ভালো থাকবেন। আপনার সুস্থতা কামনা করছি।

 : আপনাদের ধন্যবাদ

Global tv



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: