ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বন্যার্তদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসুন

বন্যা প্রতিবছরের ধারাবাহিক প্রাকৃতিক দূর্যোগ, মোকাবেলা নয় স্থায়ী ও সঠিক পরিকল্পনা করা প্রয়োজন

gazi anwar | প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯ ২১:১০

gazi anwar
প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯ ২১:১০

 

দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বিপদ সীমা অতিক্রম করছে নদ-নদীর পানি। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলে মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে। বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। খোলা আকাশের নিচে অনেকে আশ্রয় নিয়েছে। খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ত্রাণ তৎপরতা চলছে, তবে সেটা পর্যাপ্ত নয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বন্যা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রয়োজনীয় টাকা, চাল ও শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে এবং তাঁবু পাঠানো হবে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সেটাই আমাদের কাম্য।

প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে বলা হচ্ছে , দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, বগুড়া, নেত্রকোনা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফসল ও গবাদি পশু নিয়ে মানুষ তীব্র বিপদে আছে। পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতিসহ এসব জেলায় বানের পানি বাড়বে বলে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। এতে মানুষ আরো মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হবে। এ ছাড়া বন্যার সময় পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এমনকি ফসলহানির কারণে চাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামেও এর প্রভাব পড়ে। এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ও আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প নেই। যেসব জেলা এরই মধ্যে বন্যার কবলে পড়েছে, সেখানকার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ ছাড়া ফসল ও গবাদি পশুর ক্ষয়-ক্ষতির পাশাপাশি গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে এবং ওইসব জেলার স্কুলগুলোতে পাঠদান বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি যেন আরো খারাপ না হয়; সে জন্য আগাম ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

বলাবাহুল্য, দেশে প্রায় প্রতি বছরই নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর মধ্যে বন্যার কারণেই মানুষকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় বাঁধ মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ, তৈরিসহ দুর্যোগ থেকে রক্ষার কার্যক্রমগুলো চলে ঢিমেতালে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভুগতে হয় বন্যাকবলিত মানুষকে। এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় সরকারি নজরদারি ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মানসম্পন্ন বাঁধ নির্মাণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, সমস্যা গভীর না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বশীল পক্ষের টনক নড়ে না। উপরন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের অনিয়ম-অবহেলায় পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। দুর্যোগের ওপর যেহেতু কারো হাত নেই, তাই বরাবরই সচেতন থাকতে হবে কীভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়, সেটা নিশ্চিত করা।

বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো আমাদের সাধ্যাধীন নয়। তবে যথাযথ প্রস্তুতি নিলে মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চয় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আমরা আশা করছি, এসব নানা দিক বিবেচনায় নিয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। যদিও সরকার এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। আগাম প্রস্তুত থাকলে ক্ষতি অনেকটা হ্রাস পাবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: