ঢাকা | শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপুর্ন ফলাফল করেছে পাবনার ৭ জন্মান্ধ শিক্ষার্থী !

| প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৫২


প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৫২

বার্তা সংস্থা পিপ (পাবনা) : চোখের আলো না থাকলেও এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপুর্ন ফলাফল অর্জন করেছে পাবনার ৭ জন্ম অন্ধ শিক্ষার্থী। শ্রুতি লেখকের সহায়তায় অন্য সব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা এই সফলতা অর্জন করে।  পাবনার মানবকল্যাণ টাষ্ট্রের সহায়তায় পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ এবং পাবনা ইসলামিয়া কলেজ কেন্দ্র থেকে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের ছাত্র হিসেবে ১ জন, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ থেকে ১ জন এবং দোগাছি কলেজ থেকে ৫ জন পরীক্ষা দেয়। পাবনার বিশিষ্টজন অন্ধ ৬ এই শিক্ষার্থীর সফলতাকে অভিনন্দন জানিয়ে তাদেরকে সহায়তা করতে সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। 
যারা কৃতিত্বপুর্ন ফলাফল করেছে তারা হলেন পাবনা সদর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মো. মোয়াজ্জেম প্রামানিকের ছেলে মো. রুহুল আমিন, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট। ময়মিনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার গুজিরাম গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে তোফায়েল মিয়া, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ০৮ পয়েন্ট। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার শাহমুখদুম গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ০৮ পয়েন্ট। খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার দেরুলি গ্রামের কানাই মন্ডলের ছেলে গোলক মন্ডল, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ বাঐতোরা গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে খোকন আলী তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৪২ পয়েন্ট এবং একই জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার প্রতাপ বাঙালা গ্রামের মন্তাজ আলীর ছেলে রাকিব হাসান, তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট। এই ছয় মেধাবী জন্ম থেকেই অন্ধ। তারা পাবনার মানব কল্যান ট্রাষ্টের আশ্রয়ে থেকে বিনা খরচে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। 
অন্ধ শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শ্রুতি লেখকের সহায়তায় একই প্রশ্নে তাদের পরীক্ষা দিতে হয়। অনেক সময় আমরা সঠিক বলে দিলেও শ্রুতি লেখক লেখতে ভুল করে বসে। এতে মার্ক কমে যায়। সে আরও জানান, শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে দেশের সমস্ত অন্ধদের সাহায্য করাই তার মুল লক্ষ্য। 
পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাষ্ট্রের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: আবুল হোসেন বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, অন্ধদের লেখপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। এখন পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসব অন্ধদের শ্রুতি লেখক সম্মানী তো দুরের কথা লেখা পড়ার করার নুন্যতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা  নেই। তার পরেও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষা জীবন। তিনি আরও বলেন, এই ৭ জন পরীক্ষার্থীর মত আরো শতাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যান ট্রাষ্টে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা পড়া করছেন। 
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. এম আবদুল আলীম বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, এ সব অন্ধ শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্চকে আমাদের সহায়তা করা উচিৎ। তাদের এই ফলাফল প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। মানবকল্যাণ ট্রাষ্ট্রকে সরকারী পৃষ্টপোষকতা দেয়া হলে সারা দেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারে বলে তিনি মনে করেন। 
পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষায় অন্ধ শিক্ষার্থীদের ফলাফল আশাব্যাঞ্জক। এদের সহায়তা করতে সরকার সম্ভাব্য সহায়তা করবে।  



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: