
বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীতে সুগন্ধ ছড়াতে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা হয়। এটির রয়েছে নানা ওষুধি গুণ। তবে রমজান মাসে ইফতারিতে অনেকের পুদিনা পাতা ছাড়া যেন চলেই না, তাই এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই পাতার ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি দামও মেলে আশানুরূপ। তাই মাহে রমজানকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নে তিনটি গ্রামে পুদিনা পাতা চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষীরা।
শহরাঞ্চলের চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট, পাঁচতারা হোটেলে ও বিয়ে-সাদিতে বিভিন্ন খাবারে পুদিনার ব্যবহার করতে দেখা যায় আমাদের দেশে। বিশেষ করে বোরহানি ও সালাতের সঙ্গে পুদিনা পাতার ব্যবহার সচরাচর হয়ে আসছে। তবে সিরাজদিখানের পুদিনা পাতার চাষীরা প্রতি বছর মাহে রমজানকে উদ্দ্যেশ্য করে পুদিনা পাতা চাষ করেন । মাহে রমজানে ইফতারের সঙ্গে পুদিনা পাতার ব্যবহার দিন দিন বেড়েছে অনেক গুন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার রমজানে পুদিনা পাতার ব্যাপক বাজারজাত করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের পুদিনা পাতার চাষীরা ।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের চান্দেরচর, খাসকান্দি ও মদিনা পাড়া গ্রামের বিস্তির্ণ জমি জুড়ে এখন চলছে পুদিনা পাতা চারার পরিচর্চা চলছে । রমজানে কয়েক লাখ টাকার পুদিনা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন এখানকার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,এবার ওই তিনটি গ্রামে প্রায় ৬ হেক্টর জমিতে পুদিনা পাতার চাষাবাদ হয়েছে । দিন দিন পুদিনা পাতার চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানা যায় কৃষি অফিস সূত্রে ।
উপজেলার মদিনা পাড়ার চাষী দেওয়ান মোহাম্মদ বলেন-সরকারি ভাবে পুদিনা পাতা চাষে উৎসাহ দেওয়া হলে চাষীদের মধ্যে এ পাতা চাষাবাদে আগ্রহ বাড়তে পারে। তাছাড়া সিরাজদীখান উপজেলা থেকে দেশব্যাপী পুদিনা পাতা চাষ আরো বিস্তৃত হতো। চান্দেরচর গ্রামের চাষী মো. হোসেন আলী জানান, এ বছর আমি ১ হেক্টর জমিতে পুদিনা পাতা চাষাবাদ করেছি। রমজানে পুদিনা পাতার চাহিদাও বেশি। আশা করছি প্রথম রমজান থেকেই বাজারে বিক্রি করতে পারব । ঢাকার কাওরন বাজার,শ্যামবাজার,যাত্রবাড়ীসহ বিভিন্ন পাইকারি আড়তে পুদিনা পাতা বিক্রি করব ।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.আঞ্জুমান আরা বলেন, পুদিনা পাতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ক্যানসার, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মানুষকে বাঁচাতে সাহায্য করে । এর ব্যবহারে গলার ক্ষত প্রতিরোধ করে, দাঁত ও মাঢ়ির ক্ষত সারিয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো.আবু সাঈদ শুভ্র জানান, বানিজ্যিক ভাবে শুধু মাত্র সিরাজদীখান উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেই পুদিনা পাতার চাষাবাদ করা হচ্ছে। উপজেলার আর কোথাও পুদিনা পাতার চাষাবাদ দেখা যায় না। এ অঞ্চলে প্রায় ৬ হেক্টর জমিতে পুদিনা পাতার চাষ হয়েছে ,আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যেই তারা ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করবে ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: