odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Tuesday, 4th November 2025, ৪th November ২০২৫

মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ বছরেও চালু হয়নি অস্ত্রোপচার

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২১ December ২০২৪ ১৩:৫৫

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২১ December ২০২৪ ১৩:৫৫

চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান সংকটের কারণে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার কক্ষ হাসপাতাল নির্মাণের ১৫ বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসক সংকটের কারণে শুধু অস্ত্রোপচারই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে কম খরচে মানসম্মত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি শুরুতে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট করা হলেও ২০১৮ সালে সরকার ৫০ শয্যায় উন্নীত করে। তবে এরপর ৫ বছরেও জনবল অনুমোদনসহ ৫০ শয্যার সুযোগ-সুবিধা চালু করা হয়নি। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে এখানে ৩৬ জন চিকিৎসক প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে এখানে কর্মরত রয়েছেন ৩১ শয্যা হাসপাতালের ১৭ জনের স্থলে মাত্র ৮জন চিকিৎসক। তিনজন অন্যত্র আছেন সংযুক্তিতে। একজন আছেন প্রশিক্ষণে। ৪ জন আছেন কর্মস্থলে। চারজন ডাক্তারকে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান কখনো ঢাকায় প্রশিক্ষণে থাকেন, আবার কখনো জেলা শহরের বিভিন্ন মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন। চিকিৎসা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান ও আকিব হাসান মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল ও গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংযুক্ত রয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, এখানে মেডিকেল টেকনোলজিস্টের আটটি পদই শূন্য। আয়ার পাঁচটি পদ থাকলেও মাত্র দুজন কর্মরত রয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকার কথা ১২ জন। পুরো হাসপাতালটিকে মাত্র তিনজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে সামাল দিতে হচ্ছে। মাত্র একটি এক্স-রে যন্ত্র, সেটিও তিন বছর ধরে বিকল পড়ে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জনবল সংকটে রোগীদের অতি জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা সম্ভব হচ্ছে না এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এমনকি এক্স-রের মতো সাধারণ পরীক্ষাও এখানে হয় না। রক্তের নানা পরীক্ষাও হাসপাতালে করানো সম্ভব হয় না। বেশির ভাগ রোগীকে হাসপাতালের সামনে গড়ে ওঠা বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয়। এতে করে নিম্ন আয়ের রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাসিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালটিতে অন্তর্বিভাগে ৯২৩১ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৩ হাজার ৩৩০ জন। ২০ ডিসেম্বর হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৫জন। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অভাবে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয় না।

জরুরি রোগীদের জেলা শহরের জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক, সার্জারি চিকিৎসক, অবেদনবিদ থাকলে ছোট-বড় অস্ত্রোপচার এখানেই করা সম্ভব।

ওটির যন্ত্রপাতি ১৫ বছরে একবারও ব্যবহার করা হয়নি। এতে যন্ত্রপাতির বর্তমান অবস্থা কেমন, তা বলা মুশকিল। এক্স-রে যন্ত্র বিকল হয়ে রয়েছে টেকনিশিয়ানের অভাবে। সাধারণ রোগীদের টাকা খরচ করে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে।

আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার (আরএমও) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। গাইনী কনসালটেন্ট সুরাইয়া শারমিন সপ্তাহে তিনদিন চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বৃহস্পতিবার মেডিকেল অফিসার সুপ্রিয়া গুপ্তার চেম্বারের সামনে দেখা গেল নারী পুরুষের লম্বা লাইন। মেডিকল অফিসার (আয়ুুর্বেদিক) মাকসুদুর রহমানকে সব রোগের চিকিৎসা দিতে দেখা যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাবেয়া খাতুন  জানান, এখানে চিকিৎসকের দেখা পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। সেবিকারাই  বেশী সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে প্যারাসিটামল, ভিটামিন বড়ি, গ্যাসের ওষুধ ছাড়া সবই বাইরে থেকে কেনার জন্য স্লিপ ধরিয়ে দেয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শূন্যপদগুলো পূরণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে লিখিত আকারে দফায় দফায় জানানো হয়েছে চাহিদা জানিয়ে। অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নতুন যন্ত্রপাতি এসেছে। টেকনিশিয়ান এসে সংযোগ দিয়ে যাবেন

দিলরুবা খাতুন

বাসস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: