odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

নারী ফুটবলে মহাকাব্য রচনা: বোনমাতির টানা তিন ব্যালন ডি’অর জয়

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:৫৩

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:৫৩

নারী ফুটবলের ইতিহাসে অভূতপূর্ব কীর্তি গড়লেন স্পেন ও বার্সেলোনার মাঝমাঠের জাদুকরী ফুটবলার আইতানা বোনমাতি। মাত্র ২৭ বছর বয়সে তিনি হয়েছেন প্রথম নারী যিনি টানা তিনবার জিতলেন ব্যালন ডি’অর। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার জয় করে তিনি নারী ক্রীড়ার ইতিহাসে এক মহাকাব্য রচনা করলেন। ফরাসি ম্যাগাজিন ফ্রান্স ফুটবল ১৯৫৬ সাল থেকে যে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দিয়ে আসছে। যা ফুটবলে ব্যক্তিগত সাফল্যের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত। নারী ফুটবলে এ পুরস্কার চালু হয় ২০১৮ সালে। তারপর থেকে অনেক তারকা এই পুরস্কার জিতলেও বোনমাতিই প্রথম, যিনি টানা তিন আসরে শীর্ষে উঠে এলেন। এবার দ্বিতীয় হয়েছেন তাঁর জাতীয় দলের সহখেলোয়াড় মারিওনা কালদেন্তে, তৃতীয় স্থানে আছেন ইংল্যান্ডের একজন ফুটবলার। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এ বছর শীর্ষ দশের মধ্যে পাঁচজনই ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়।

২০২১ সালে প্রথম ব্যালন ডি’অর জিতে বোনমাতি আলোচনায় আসেন। তবে অনেকের চোখে সেটা ছিল কেবল শুরু। ২০২২ সালে তিনি ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা এবং ঘরোয়া লিগে অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে আবারও সেরা নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ জয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখে তিনি টানা দ্বিতীয়বার পুরস্কার জিতে প্রমাণ করেন এটা কোনো কাকতালীয় সাফল্য নয়। ২০২৫ সালে এসে আবারও সেরা হয়ে তিনি নারী ফুটবলে রচনা করলেন অনন্য মহাকাব্য। একজন মিডফিল্ডার হিসেবে বোনমাতির খেলা অনন্য। শুধু আক্রমণ বা গোল নয়, পুরো ম্যাচের ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ভেদ করা, সতীর্থদের জন্য সুযোগ তৈরি করা আর মুহূর্তের মধ্যে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এসবই তাঁর সহজাত বৈশিষ্ট্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর খেলা এতটাই কৌশলী ও সৃজনশীল যে তাঁকে নারী ফুটবলের “মেসি” বলে অভিহিত করা যায়। পুরস্কার জয়ের পর বোনমাতি আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই সাফল্য শুধু আমার নয়, আমার দলের প্রত্যেক সতীর্থের। টানা তিনবার ব্যালন ডি’অর জেতা স্বপ্নের মতো। আমি আশা করি, এই অর্জন মেয়েদের আরও বড় স্বপ্ন দেখাতে সাহায্য করবে। বার্সেলোনার কোচ তাঁকে নারী ফুটবলের নতুন মানদণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ফিফা সভাপতির মতে, বোনমাতি শুধু স্পেন বা বার্সেলোনার নয়, পুরো বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে অনুপ্রেরণার প্রতীক।

নারী ফুটবল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। দর্শকসংখ্যা বেড়েছে, টুর্নামেন্টের মান উন্নত হয়েছে এবং তারকাদের প্রভাব বিস্তার করছে সর্বত্র। এই প্রেক্ষাপটে বোনমাতির টানা তিন ব্যালন ডি’অর জয় নারী ফুটবলের নতুন যুগের প্রতীক হয়ে উঠেছে।  ব্যালন ডি’অরের রেকর্ড বইয়ে এখন সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে আইতানা বোনমাতির নাম। তাঁর এই অর্জন কেবল ব্যক্তিগত গৌরব নয়, বরং নারী ফুটবলের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। মাঠে তাঁর দৃঢ়তা, নেতৃত্ব ও সৃজনশীলতা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ফুটবলারদের জন্য হয়ে থাকবে প্রেরণার বাতিঘর।

টানা তিন ব্যালন ডি’অর জয়ের এই কীর্তি প্রমাণ করে, নারী ফুটবলেও তৈরি হচ্ছে কিংবদন্তি। আর সেই কিংবদন্তির নাম এখন আইতানা বোনমাতি। আমাদের অভিনন্দন।

- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: