ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ভুটানে অটিজম সম্মেলন

প্রতিবন্ধীদের মর্যাদার জীবন দিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

Admin 1 | প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ২২:০৮

Admin 1
প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ২২:০৮

প্রতিবন্ধী ও অটিজম-আক্রান্ত লোকজনকে সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে মর্যাদার জীবনযাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য কার্যকর নীতি এবং কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল বুধবার সকালে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার-বিষয়ক তিন দিনের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে দেওয়া ভাষণে বিশ্বনেতাদের প্রতি এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি হিসেবে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ও সূচনা ফাউন্ডেশন, অ্যাবিলিটি ভুটান সোসাইটি (এবিএস) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের কারিগরি সহযোগিতায় রয়্যাল ব্যাংকোয়েট হলে এ সম্মেলন শুরু হয়েছে। এ বছর সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ‘এএসডি ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্টাল সমস্যায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য কার্যকর ও টেকসই বহুমুখী কর্মসূচি’।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তেসারিং তোবগে সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভাষণ দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ত্রপাল সিং। ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিয়নপো তানদিন ওয়াংচুক দেন স্বাগত বক্তৃতা। এই সেশনের প্যারেন্ট স্পিকার ছিলেন চিম্মি লাদেন। ‘সেন্ট্রোল অ্যান সুলেভান দেল পেরু’র প্রতিষ্ঠাতা ও কার্যনির্বাহী পরিচালক ইয়োল্যান্ডা মায়া ওর্তেগা একটি বিশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। ভুটানের রানি জেটসান পেমা, সূচনা ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশের অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার-সম্পর্কিত জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন, আমরা প্রতিবন্ধী ও অটিজম-আক্রান্তদের বহুমুখী প্রতিভার স্বীকৃতি দিতে সংকল্পবদ্ধ হই; তাঁদের মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের সুযোগ দিই; যাতে তাঁরা সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ঝুঁকির মুখে থাকা নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সব দেশের জন্যই প্রয়োজনীয় এবং সরকারগুলোর উচিত এ জন্য নীতি এ কর্মসূচি প্রণয়ন করা; যাতে কোনো নাগরিকই অবহেলার শিকার না হয়।

অটিজম-আক্রান্ত ব্যক্তিরা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার সুযোগের দাবিদার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা আমাদেরই কর্তব্য তাদের জন্য জীবনের প্রতিটি স্তরে শিক্ষা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করা।’ তিনি বলেন, এ ধরনের ব্যাধিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যেখানেই থাকুন না কেন, তাঁরা সবার ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে বসবাস করার অধিকার রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন তাঁরই মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। গতকাল থিম্পুতে অটিজম-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কর্ম-অধিবেশনে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর মেয়ে। অটিজম নিয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার-বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার-সংক্রান্ত তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনার সভাপতি প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার একটি জটিল নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার (এএসডি), যেটি মস্তিষ্ক বা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম গড়ে ওঠার সময় প্রতিবন্ধিতার সৃষ্টি করে।

দূতাবাসের চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল হেজোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেছেন। ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাসো তেসারিং তোবগের উপস্থিতিতে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ফলক উন্মোচন করেন।

এর আগে হেজোতে বাংলাদেশের দূতাবাস প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা বরাদ্দে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো দামচো দর্জি নিজ নিজ দেশের পক্ষে একটি চুক্তিতে সই করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: