ঢাকা | সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চীন অনন্য ভূমিকা পালন করছে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে

odhikar patra | প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০০:২৭

odhikar patra
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০০:২৭

চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং (ঢাকাস্থ )আজ বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের একটা টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে বেইজিং অনন্য ভূমিকা পালন করছে। কারণ এ ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি তার দেশ শেয়ার করে।
লি জিমিং বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধানের ব্যাপারে চীন সর্বদা মিয়ানমারকে রাজী করানোর চেষ্টা করে। কারণ এতে উভয় দেশ লাভবান হবে (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) এবং আমি মনে করি এক সময় রোহিঙ্গা সমস্যার নিস্পত্তি ঘটবে।’
চীনা দূত বলেন, চীন তার ঐতিহ্যবাহী বন্ধু দেশ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে এই সংকটের সমাধানে অবদান রাখছে, কাজ করছে। বেইজিং এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে এবং আশু প্রত্যাবাসনে সম্ভব সকল ধরনের সহায়তা করবে।
একই সঙ্গে তিনি একথাও বলেন, বাংলাদেশের ন্যায় মিয়ানমারও একটি সার্বভৌম দেশ, অতএব কি করতে হবে সে ব্যাপারে মিয়ানমারকে সবক দেয়ার কোন অধিকার চীনের নেই।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ফাইন্ডিং ওয়ে টু পিসফুল রিপেট্রিয়েশন অব রোহিঙ্গা’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। চীনা লি জিমিং দূত বলেন, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন এবং তিনি নিজে অবস্থান করে বিগত দু’মাসে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছেন।
তিনি (লি জিমিং)বলেন, তারা ইতোমধ্যেই অনেকগুলো অভিন্ন বিষয় চিহিৃত করেছেন এবং তারা এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যাচাইকৃত ৩,৪৫০ জন রোহিঙ্গা আগাম প্রত্যাবাসনের জন্য অগ্রাধিকার গ্রুপ হবে। এ সকল রোহিঙ্গা সীমান্তের ”জিরো লাইনে” অবস্থান করছে। এদের সকলেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক।
লি জিমিং আরো জানান, তারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে আস্থা অজর্ন করতে এবং ভুল বোঝাবুজির অবসান ঘটাতে জাতীয় যাচাই সনদ,(এনভিসি) মিয়ানমারের বাড়িঘর ছেড়ে আসা আরো রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করতে সম্মত হয়েছেন। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন আরো বাস্তবসম্মত করতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে চীনের প্রচেষ্টা উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশি দুটি দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং জি ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করেন। এই সংকটের সমাধান খুজে বের করতে তার সভাপতিত্বে ২০১৮ সালে এবং চলতি বছরে চীন, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের মধ্যে তিন দফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত রাষ্ট্রদূত সান গুইজিয়াং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ”শাটল ডিপ্লোমেসি” চালান।
দূত বলেন, মধ্যস্থতার অংশ হিসাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীদের জন্য চীন সাহায্য এবং চিকিৎসা সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, চীনের পক্ষ থেকে ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের আবাসন সুবিধা প্রদানের জন্য মিয়ানমারকে ১১০০ এ্যাসেম্বল গৃহ এবং ১০০০ অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করেছে।
তিনি বলেন, অন্যান্য দাতাদের তুলনায় তুলনামূলক ভাবে চীনের সহায়তা যথেষ্ট না হলেও, আমরা রোহিঙ্গা সংকট ধীরে ধীরে সমাধানে এ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি এখানে দীর্ঘ সময় অবস্থান না করলেও তার কাজের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুটি অগ্রাধিকার পাবে। গত আগস্ট মাসে তিনি বাংলাদেশে আসেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। জাতিসংঘ হাইকমিশনের উদ্বাস্তু বিষয়ক প্রতিনিধি স্টীভেন কারলিস, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: