ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আল কোরআনের মর্যাদাপূর্ণ নামসমূহ

odhikar patra | প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:১৯

odhikar patra
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:১৯

মহান রাব্বুল আলামীন আল কোরআনের বিভিন্ন সূরার বিভিন্ন আয়াতে আল কোরআনের অনেকগুলো নাম উল্লেখ করেছেন। এই নামগুলোর মাধ্যমে সকল আসমানী কিতাবের ওপর কোরআনুল কারীমের শ্রেষ্ঠত্ব মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে। যেমন: ক. কোরআনুল মাজীদ : ইরশাদ হয়েছে, বালহুয়া কোরআনুম মাজীদ।
অর্থাৎ, বরং এটা হচ্ছে মর্যাদাপূর্ণ কোরআন। (সূরা বুরুজ : আয়াত ২১)। খ. কোরআন হাকীম : ইরশাদ হয়েছে, ইয়াছিন, ওয়াল কোরআনিল হাকীম। অর্থাৎ, ইয়াছিন, বিজ্ঞানময় কোরআনের শপথ। (সূরা ইয়াসিন : আয়াত ১-২)। গ. কোরআন কারীম : ইরশাদ হয়েছে, ইন্নাহু লা কোরআনুন কারীম। অর্থাৎ, নিশ্চয়ই তা মহীমময় কোরআন। (সূরা ওয়াকিয়া : আয়াত ৭৭)। ঘ. কিতাব মুবীন : ইরশাদ হয়েছে, তিলকা আয়াতুল কিতাবিল মুবীন। অর্থাৎ, এগুলো হচ্ছে সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াতরাজি। (সূরা কাসাস : আয়াত ২)। ঙ. কোরআন আরবী : ইরশাদ হয়েছে ইন্না আনযালনাহু কোরআনান আরাবিয়্যাল লায়াল্লাকুম তাত্তাকুন। অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আমি এই কোরআন আরবী ভাষায় নাজিল করেছি, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। (সূরা ইউসুফ : আয়াত ২)।

চ. ফুরকান : ইরশাদ হয়েছে, তাবারাকাল্লাজি নাযযালাল ফুরকানা আলা আবদিহি। অর্থাৎ, বরকতময় সেই সত্তা, যিনি স্বীয় বান্দাহর প্রতি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী কিতাব নাজিল করেছেন। (সূরা ফুরকান : আয়াত ১)। ছ. বুরহান : ইরশাদ হয়েছে, ইয়া আইয়্যুহান্নাছু ক্বাদ জ্বাআলাকুম বুরহানুম মির রাব্বিকুম। অর্থাৎ, হে মানবমন্ডলী, অবশ্যই তোমাদের পরওয়ারদিগারের নিকট হতে এক দলীল তোমাদের নিকট এসেছে। (সূরা আন নিসা : আয়াত ১৭৪)।

 

জ. নূর : ইরশাদ হয়েছে, ওয়া আনযালনা ইলাইকুম নূরাম মুবিনা। অর্থাৎ, এবং আমি তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট নূর নাযিল করেছি। (সূরা আন নিসা : আয়াত ১৭৪)। ট. হেদায়েত : ইরশাদ হয়েছে, হুদাল লিল মুত্তাকীন। অর্থাৎ, (এই কিতাব) মুত্তাকীদের পথ প্রদর্শক। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২)।

এই নিরিখে স্পষ্টত: বোঝা যায় যে, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহের সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহপাক গ্রহণ করেননি। পক্ষান্তরে কোরআনুল কারীমের সংরক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং তিনি গ্রহণ করেছেন। ফলে আগের কিতাবসমূহ পরিবর্তিত বা বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু কোরআনুল কারীম পরিপূর্ণভাবে অক্ষতরূপে অবশিষ্ট আছে এবং থাকবে। এতে কোনোই সন্দেহ নেই।

তাছাড়া আগের আসমানী কিতাবসমূহের বিধানাবলী হয়ত অত্যন্ত কঠোর ছিল অথবা একান্ত নরম, শীতল ও ঢিলা প্রকৃতির ছিল। পক্ষান্তরে কোরআনুল কারীমের সকল বিধান অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী। যা সর্বকালের সকল মানুষের জন্য উপযুক্ত ও উপকারী। মহাপ্রলয় পর্যন্ত এর আমল বাস্তবায়নযোগ্য ও উপকারী। আল কোরআনে এই বিশেষত্বটি এভাবে বিবৃত হয়েছে।

 

ইরশাদ হয়েছে : সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রাসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষণা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দিত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর ওপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে। (সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৭)।

মোটকথা, অবতীর্ণ নূর বা কোরআনুল কারীমের অনুসরণ ছাড়া মুক্তিলাভের কোনোই উপায় নেই। যারা পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহকে বিকৃত করেছে এবং নিজেদের সে সকল কিতাবের অনুসারী বলে সদম্ভে দাবি করছে, তাদের প্রতি আমাদের একান্ত জিজ্ঞাসা এই যে, আপনারা আপনাদের কিতাবসমূহের কোনো হাফিজ বা স্মৃতিপটে পুংখানুপুংখরূপে সংরক্ষণকারী আনয়ন করুন, তা কস্মিনকালেও আনয়ন করতে পারবেন না। অথচ কোরআনুল কারীমের লক্ষ লক্ষ হাফিজ পৃথিবীতে পূর্বেও ছিল বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, ইনশাআল্লাহ। (তথ্য সংগৃহীত )



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: