odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 22nd October 2025, ২২nd October ২০২৫

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় মা ও শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৭ June ২০২০ ০৪:৩৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৭ June ২০২০ ০৪:৩৯

 

চট্টগ্রাম, ৬ জুন, ২০২০  : চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনে করোনা রোগীদের জন্য ১০টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ ৬০ শয্যার চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আজ দুপুরে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে হাসপাতালটিতে করোনা ইউনিট উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এ সময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির টেলি-কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ডা. আঞ্জুমান আরা বেগম, সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন ও রেজাউল করিম আজাদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির এই মহা দূর্যোগ মুহুর্তে দ্রুততার সঙ্গে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল আজ যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা অন্যদের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, আজকের পত্রিকায়ও দেখেছেন, হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভর্তি হতে না পেরে স্ত্রীর সামনে অসহায়ভাবে স্বামীর মৃত্যু ঘটেছে। এধরনের মর্মান্তিক ঘটনা অত্যন্ত অনাকাঙ্খিত।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি কোন হাসপাতাল থেকে রোগীকে এভাবে ফেরত দেওয়া একটি মানবতা বিরোধী কাজ। এধরনের কাজ যেসমস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করছে তাদের জন্য নিশ্চয়ই মা ও শিশু হাসপাতালসহ করোনা চিকিৎসায় এগিয়ে আসা অন্যান্য হাসপাতালগুলো শিক্ষণীয়। সরকার এগুলো পর্যবেক্ষণ করছে এবং সময়মতো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আমরা বেশ সহযোগিতা পেয়ে আসছি। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল আমাদের জন্য অহংকার, তারা আন্তরিকভাবে কাজ করছে। অনেকটা প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মতো।
তিনি বলেন, এ মুহুর্তে পাস্ট-ফিউচার চিন্তা না করে চলমান ক্রাইসিস কোভিটকে প্রায়োরিটি দেয়া উচিত। কিভাবে এটাকে কন্ট্রোল করা যাবে তাতে জোর দিতে হবে। আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
চট্টগ্রামে আরো যেসব প্রাইভেট হাসপাতাল আছে তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, মানুষকে যতটুকু সম্ভব হেল্প করেন, মানুষকে সেবা দিয়ে যেতে হবে, নাহলে সমস্যা বাড়বে। আতংকিত না হয়ে সচেতন হতে হবে, প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। এখন চট্টগ্রামে আপ চলছে, এরপর ডাউন হয়ে যাবে এবং আমরা ওভারকাম করবো ইনশাল্লাহ।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ক্লিনিক ও হাসপাতালের দুয়ারে রোগীরা যাচ্ছেন। কিন্তু অনেকে রোগীকে গ্রহণও করছে না, এটা ভালো নয়। আমাদের সরকার তো সব হাসপাতাল উম্মুক্ত করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন, সব হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, কোভিট পজিটিভ হলেই যে হাসপাতালে যেতে হবে তা কিন্তু নয়। বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নেয়া যায়। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, আরেকটা বিষয় হচ্ছে, ডাক্তার নার্স চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এদের লিস্ট আমাদের দেন। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। তারা তাদের নৈতিকতা-দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারবে না। এটা আসলে অনেকটা ওয়ার জোনের মতো। এ সময়ে কেউ যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে চলে যাবে এটা মানা যায় না।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, স্থানীয় মিডিয়ায় ‘অক্সিজেনে শ^াস নিতে চায় চট্টগ্রাম’ এ ধরণের শিরোনামে সংবাদ আসায় আরো বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের বাসায় প্রায় ১০ জন করোনা রোগী ছিল, কিন্তু চিকিৎসকরা আমাদেরকে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগবে এরকম কিছু বলেন নি।
শ^াসকষ্টজনিত সমস্যায় সাথে সাথেই যে অক্সিজেন লাগবে বিষয়টা সেরকম নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এ সংবাদের ফলে ভীতি থেকে অনেকের মধ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনার বা নেয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে।’
চট্টগ্রামের অন্যান্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নন-কোভিট রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শিক্ষা উপ-মন্ত্রী বলেন, জনগণের মধ্যে একটি শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, নন-কোভিট রোগীরা এমুহুর্তে চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, মা ও শিশু হাসপাতাল ১০ টি আইসিইউ বেডের সুবিধাসহ ৬০ শয্যার করোনা চিকিৎসা ইউনিট চালু করে নজির স্থাপন করেছে। আশাকরি, তাদের দেখে অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালও উদ্যোগ নেবে।
অনেকগুলো হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা চালু হলে বৈশি^ক এই মহামারিতে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে যাবে বলে জানান তিনি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: