কালো কুচকুচে পিচের ওপর সাদা, হলুদ, নীল রঙের প্রলেপ পড়ছে। আরও ঝকঝকে, তকতকে হয়ে উঠছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের দুই পাশের সড়ক। দিন দশেক ধরেই চলছে এই কর্মযজ্ঞ। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাত ঘেঁষে কয়েকজন কর্মীকে কাজ করতে দেখা গেল। রাস্তায় সাইকেলের চিহ্ন বসাচ্ছেন। জিজ্ঞেস করতেই একজন বললেন, সাইকেল লেন হবে।

ঢাকার রাস্তায় সাইকেল লেন হচ্ছে, এমন খবরে সাইক্লিস্টদের খুশির অন্ত নেই। কদিন ধরে সাইক্লিং রিলেটেড ফেসবুক পেজগুলোর ফিড ভরে উঠছে নানা ছবি ও ভিডিওতে। অনেকে এতে খুশি। কারও কারও মন খারাপ। কারণ, সাইকেলের লেন হিসেবে সড়কের সর্ব বাঁয়ের যে অংশটি বেছে নেওয়া হয়েছে, সেটি ফুচকা, চটপটি ও চা বিক্রেতাদের দখলে। আর মোটরসাইকেল, গাড়ির পার্কিং তো আছেই। বিকেল থেকে লোকজন বেড়াতে আসেন সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার এই পাশটায়। অনেকে আসেন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতে। সে কারণে রাত ১১টা–১২টা অবধি ফুটপাত ঘেঁষে রাস্তার ওপর মোটরসাইকেল, মোটরগাড়ি দাঁড় করানো থাকে। এখন সেখানটাতেই করা হলো সাইকেল লেন। এই লেন ব্যবহার আদৌ কতটা করা যাবে, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাইক্লিস্টরা।

এক সাইক্লিস্ট বললেন, ‘সরকার এত এত টাকা খরচ করে সাইকেল লেন বানাল। কিন্তু আমরা এর কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। সুবিধা পাচ্ছে অবৈধভাবে পার্ক করে রাখা যানবাহনের মালিকেরা।’
এদিকে বছরের পর বছর ধরে মানিক মিয়ার রাস্তার পাশে ব্যবসা করে আসা ব্যবসায়ীরা আছেন শঙ্কায়। তাঁদের ভয়, এই লেনের কথা বলে আবার না তাঁদের উচ্ছেদ করা হয়! দু–তিনজন চটপটি ও ফুচকা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, করোনাকালে তাঁদের ব্যবসা বলতে কিছু ছিল না। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই উচ্ছেদ–আতঙ্কে ভুগছেন।
প্রথম আলো
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: