ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

ওয়ানডে র‍্যংকিং এর অনন্য চূড়ায় সাকিব-

amaderodhikarpatra@gmail.com | প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৪৮

amaderodhikarpatra@gmail.com
প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৪৮

 

* এস এম শামীম সৈকত।

সাকিব আল হাসান, শুধু একটি নাম নয়, একটি অনুপ্রেরণা। একটা সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন সারথী ছিলেন এই সাকিব আল হাসান। দেশে দেশে রটে গেছে একই স্লোগান- ‘বাংলাদেশের জান বাংলাদেশের প্রাণ, সাকিব আল হাসান।’

দেশের তো বটে গোটা বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার সাকিব যে কি না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার জায়গা দখল করেছিলেন একই সময়ে। এই বিশ্বরেকর্ড নেই আর কোনো ক্রিকেটারের।


ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার ধরা হয় সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটোর জ্যাক ক্যালিসকে। এখনো অব্দি সাকিবকে গননা করা দ্বিতীয় সেরা অলরাউন্ডার।

দিনকে দিন সাকিব যেই গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন তাতে তো আমরা মুখ ফুটে বলতেই পারি সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন সবাই বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানকে সর্বকালের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে স্বীকৃতি দিবেন।

কি অবাক হলেন! বিশ্বাস হচ্ছে না? কথায় নয় কাজে প্রমাণ দিতে চাই। চলুন দেখে নেওয়া যাক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অলরাউন্ডার সাকিবের পারফরম্যান্সের সাথে অন্যান্যদের তুলনামূলক পারফরম্যান্স কেমন।

ওয়ানডে ক্রিকেটের পরিসংখ্যানের দিকে যদি তাকাই- ওয়ানডেতে সাকিব রান করেছেন ২০৯ ম্যাচে ৬৪৩৬। এবং উইকেট শিকার করেছেন ২৬৬টি।


দীর্ঘ এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পরেও এখন ওয়ানডেতে অলরাউন্ডার র‌্যাংকিয়ে সাকিবের বর্তমান অবস্থান নাম্বার ওয়ানে। সাকিবের বর্তমান রেটিং পয়েন্ট ৪২০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আফগান ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবীর (২৯৪ রেটিং পয়েন্ট) চেয়ে সাকিব এগিয়ে ১২৬ রেটিং পয়েন্টে। বুঝতেই পারছেন কতটা এগিয়ে রয়েছেন সাকিব।

২৮১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস। এবং চতুর্থ স্থানে থাকা আরেক ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের পয়েন্ট ২৭৬।


২য়, ৩য় ও ৪র্থ নাম্বারে থাকা ক্রিকেটারদের পয়েন্টের পার্থক্য খুব নিকটবর্তী হলেও সাকিবের ধারেকাছেও নেই কেউ।

প্রতিদ্বন্দ্বী নবীর সাথে রেটিং পয়েন্টের পার্থক্য এক-দুই কিংবা দশ-বিশ নয়, পাক্কা ১২৬! এ যেন তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব্বাইকে ছাড়িয়ে। এতেই বুঝা যায় অন্যদের তুলনায় অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে কতটা এগিয়ে রয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। কিন্তু এতো দীর্ঘ সময় পরেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে এতোটা সময় লাগেনি নিজেকে তৈরি করে নিতে। যথারীতি ফিরে পেয়েছেন নিজের ধারাবাহিক ফর্ম। সদ্য সমাপ্ত উইন্ডিজের সাথে ওয়ানডে সিরিজে দেখিয়েছেন নিজের চিরাচরিত রুপ।

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে করেছেন ১১৩ রান। এবং উইকেট শিকার করেছেন ৬টি। শুধু তাই নয় ১৬ মাস পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে প্রথম ম্যাচেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন এবং সিরিজ শেষে লাভ করেছেন ম্যান অব দ্যা সিরিজের খেতাব।

২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেন সাকিব। প্রথমবার নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডারের (ওডিআই) স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০০৯ সালে। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেবছর উইজডেনের বর্ষসেরাও হয়েছিলেন।

তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সাকিবকে। ২০১২ সালের মার্চে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপে দাপুটে পারফরম্যান্স করে দখল করেছিলেন একই সাথে তিন ফরম্যাটে(টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০) নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার এর জায়গা। যেটা ছিল একটা অন্যরকম বিশ্ব রেকর্ড।

আজও অব্দি এই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেননি। যদিও রেকর্ড গড়া হয় ভাঙ্গার জন্য। কিন্তু সাকিবের অন্য রকম এই রেকর্ড আদৌ কেউ ভাঙ্গতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্ব ক্রিকেটবোদ্ধারা।
বর্তমানে সাকিব আল হাসান অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ে ওয়ানডেতে ৪২০ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে ১ নাম্বারে রয়েছেন। টেস্টে সাকিব রয়েছেন ৪ নাম্বারে। সেখানে তাঁর রেটিং ৩৬৬ পয়েন্ট।

টেস্টে ৪৩৬ পয়েন্ট নিয়ে নাম্বার ওয়ান জায়গা দখল করে আছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে জেসন হোল্ডার(৪২৩) ও রাবিন্দ্র জাদেজা(৪১৯)।


টি২০ তে সাকিবের অবস্থান ২ নাম্বারে। রেটিং পয়েন্ট ২৬৮। সাকিবের উপরে টি২০ তে এক নাম্বার পজিশনে রয়েছেন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। নবীর রেটিং পয়েন্ট ২৯৪।

উল্লেখ্য যে, আইসিসির দেয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে সাকিব এখনো পর্যন্ত কোনো টেস্ট এবং টি২০ খেলেননি। আগামী ৩রা ফেব্রুয়ারি থেকে উইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন হবে সাকিবের।.......



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: