ঢাকা | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশুদের টিকাদান তরান্বিত করতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে কুলিং সিস্টেম

amaderodhikarpatra@gmail.com | প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪২

amaderodhikarpatra@gmail.com
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪২

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ : স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকার বাইরে কুলিং সিস্টেমের ঘাটতি ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের টিকাদান তরান্বিত করতে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, ফ্রিজিং ব্যবস্থা বাড়াতে প্রচেষ্টা চলছে।   
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) কর্মকর্তারা বলেন, তারা ১ নভেম্বর, ২০২১ থেকে শিশুদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছেন। এতে তারা ব্যাপকভাবে ফাইজার ভ্যাকসিনের ওপরেই নির্ভর করছেন। কারণ বৈশ্বিক গবেষণা দেখা গেছে যে ওই বয়সের জন্য এই টিকাটি উপযুক্ত ও কার্যকর। তিনি বলেন, দেশে এখন পর্যাপ্ত ফাইজার ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে এবং খুব শিগগিরই আরো ফাইজার ভ্যাকসিন আসবে। কিন্তু অন্যান্য টিকার মতো, ফাইজার ভ্যাকসিনের জন্যও সাব-জিরো কুলিং সিস্টেম প্রয়োজন।
ডিজিএইএস-এর মহাপরিচালক প্রয়েসর ডা. আবুল বাশার  মোহম্মদ খুরশিদ আলম বাসসকে বলেন, ‘আমরা এখন ঢাকার বাইরে (ফাইজার ভ্যাকসিনের জন্য) উপযুক্ত তাপমাত্রার ব্যবস্থা করতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি।’ যদিও তিনি বলেন, এইসব বাচ্চাদের বাবা-মা অথবা অভিভাবকরাও তাদের শিশুকে টিকাদানের ব্যাপারে ‘খুব একটা আগ্রহী নন’, আর এটা সারা দেশে কুলিং সিস্টেম সম্প্রসারণ করা হলেও এই কর্মসূচিকে ব্যহত করতে পারে। আলম বলেন, ‘বাচ্চাদের বাবা-মাকে এ ব্যাপারে বুঝানোর জন্য আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। আমরা আশা করছি, টিকাদান কর্মসূচি বেগবান হবে।’
কয়েকজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষক- টিকাদান কর্মসূচিটি দেড় মাসের বেশি সময় আগে শুরু হলেও কাক্সিক্ষত গতি পায়নি বলে উল্লেখ করার পর ডিজিএইচএস-এর প্রধানের এই মন্তব্যটি এলো।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. হোলাম ফারুক বলেন, ‘এই বয়স সীমার শিশুর সংখ্যা ১ কোটি এবং তাদের টিকার আওতায় আনার জন্য ২ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন।’
ডিজিএইচএস কর্মকর্তারা বলেন, তারা এখন পর্যন্ত ১১ লাখ শিক্ষার্থীকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছি এবং ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে।    ফারুক বলেন, এই বয়সী শিশুদের অধিকাংশই স্কুল-শিক্ষার্থী। আর এজন্যই তার অফিস স্কুল-ভিত্তিক টিকাদান কর্মসূচিগুলো খুব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যে, তাপমাত্রা ইস্যু ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব- উভয়ই এই কর্মসূচিকে মন্থর করে ফেলছে।
ডিজিএইচএস-এর কোভিড-১৯ টিকাদান ব্যবস্থাপনা টাস্কফোসের সদস্য-সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, বর্তমানে দেশের ৫৪টি জেলায় এই বয়সী শিশুদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাকি জেলাগুলোতেও শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের লক্ষে অবকাঠামো উন্নয়ন করছি।’
ডিজিএইচএস প্রধান বলেন, ‘দেশব্যাপী এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে আমরা ধীরে ধীরে এই টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণ করছি।’  
কোভিড-১৯ সম্পর্কিত ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডবাইসরি কমিটি’র সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ বলেন, সারা বিশ্বের সাথে একই সময়ে বাংলাদেশও দেশব্যাপী সফলভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফাইজার ভ্যাকসিন ঘাটতি দেখা দেবে না। কারণ ডব্লিউএইচও নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্সের আওতায় দেশে আরো ফাইজারের টিকা আসবে। কিন্তু যেহেতু দীর্ঘ ছুটির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে, তাই টিকাদান কর্মসূচিটি আরো বেগবান হওয়া উচিৎ ছিল। তিনি জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিনগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় কুলিং সিস্টেমসহ অন্যান্য অবকাঠামো সম্প্রসারণ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কর্মকর্তারা বলেন, টিকা কেন্দ্র হিসেবে মতিঝিল মডেল স্কুল ও কলেজসহ রাজধানীর আটটি স্কুলকে নির্বাচন করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, মতিঝিল, রমনা ও ডেমরা এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্র থেকে টিকা গ্রহণ করছে এবং এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থী তার এই স্কুলে টিকা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘গত মাসে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী এখান থেকে টিকা গ্রহণ করছে।’ তবে তিনি বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচিটি বেগবান করতে আরো স্কুলকে টিকা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিৎ।’

॥ মোরশেদুর রহমান ॥

বাসস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: