ঢাকা | শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

পিরোজপুরে শিক্ষককে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ

Admin 1 | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২৩:২৭

Admin 1
প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২৩:২৭

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সমুদয়কাঠী ইউনিয়নের মৈশানী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিধান চন্দ্র সরকারকে একটি ঘরে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই এলাকার সন্ত্রাসী নয়ন গাজী ও তার বাহিনী শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ওই শিক্ষককে অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে অন্য শিক্ষকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষিকা পর্শিয়া হালদারের সহায়তায় পালিয়ে গিয়ে ওই শিক্ষক বরিশালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

নির্যাতিত শিক্ষক বিধান চন্দ্র সরকারের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। সন্ত্রাসী নয়ন গাজী ও তার সহযোগীদের ভয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রশাসনকেও বিষয়টি জানাননি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি স্বপন কুমার জানান, ননগভর্নমেন্ট টিচার্স রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেশন অথরিটি (এনটিআরসিএ) এর মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়ার পর বিধান সরকার গত ২৪ নভেম্বর মৈশানী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিপিএড শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি পাশের একটি বাড়ির পরিত্যক্ত ঘরে একা বসবাস করে আসছেন। ঘটনার দিন শুক্রবার এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অজুহাত তুলে সন্ত্রাসী নয়ন গাজী ও তার সহযোগীরা শিক্ষক বিধান চন্দ্রকে বিদ্যালয়ের পাশের একটি দোকানের সামনে মারধর শেষে বিবস্ত্র করে ফেলে রাখে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ওই শিক্ষককে পাশের হরি মন্দিরে নিয়ে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন চালায়। পরদিন শনিবার দুপুরে নয়ন গাজীর লেখা একটি মুচলেকায় শিক্ষক বিধান চন্দ্র সরকারের স্বাক্ষর রেখে ওই বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে ছেড়ে দেয়। এরপর বিদ্যালয়ের  আরেক শিক্ষিকা পর্শিয়া হালদারের সহায়তায় তিনি পালিয়ে বরিশাল গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শিক্ষক নেতা স্বপন কুমার কুমার দত্ত দাবি করেন, ২০০১ এর নির্বাচনের দিন থেকে  নয়ন গাজী মৈশানী এলাকায় ত্রাস শুরু করে, যা এখনও চালাচ্ছে সে। তার হাতে অনেক সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। তার নামে থানায় অনেক মামলা আছে।

তিনি আরও বলেন, ‘নিজ যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন বিধান চন্দ্র সরকার। চাঁদা চেয়ে না পেয়ে সন্ত্রাসী নয়ন গাজী ও তার সহযোগীরা শিক্ষক বিধান চন্দ্র সরকারকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে। বিষয়টি আমি স্বরূপকাঠী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। এছাড়া স্বরূপকাঠী পৌরসভার মেয়র ও স্বরূপকাঠী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবিরকে জানিয়ে সহায়তা চেয়েছি।’

স্বপন কুমার দত্ত বলেন, ‘শিক্ষক নির্যাতনের বিষয়ে আজ  মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে শিক্ষকদের নিয়ে বসব।’

মৈশানী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৌলভী খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে জায়গায় চাকরি করছি সে জায়গাটা খুব খারাপ। এর বাইরে বেশি কিছু বলতে পারব না।’

এদিকে, সন্ত্রাসী নয়ন গাজী শিক্ষক বিধান চন্দ্র সরকারকে সামান্য মারধর করার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু তাকে আটকে রাখার কথা অস্বীকার করেছেন। 

স্বরূপকাঠী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নয়ন গাজী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

স্বরূপকাঠী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘নয়ন গাজীর নামে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ৭/৮টি মামলা রয়েছে। মাস খানেক আগে তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে আমি নিজেও একবার আহত হয়েছিলাম।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: