
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপ্রসূত’ প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি দাবি উঠেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের সমন্বয় কমিটি’ এই দাবি করে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৫ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ‘আই’ ইউনিটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা হয়। এতে থাকা একটি প্রশ্ন ছিল, ‘মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধদের হামলা কত তারিখে হয়?’ এ প্রশ্নের চারটি উত্তর রাখা হয়। আরেকটি প্রশ্ন ছিল, ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নামে কী?’ এর উত্তরে চারটি বিকল্প রাখা হয়। সেগুলো হলো (ক) পবিত্র কোরআন শরিফ (খ) পবিত্র বাইবেল (গ) পবিত্র ইঞ্জিল (ঘ) গীতা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন উসকানিমূলক এবং সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপ্রসূত। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে ত্রিপিটকের নামই নেই। এ ধরনের প্রশ্ন যেকোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরীক্ষার্থীর জন্য বিব্রতকর। তিনি বলেন, সরকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক শক্তি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিপ্রায়ে এসব কাজ করে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে যেসব শিক্ষক এই প্রশ্নপত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের চিহ্নিত ও বিচার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়। এসব শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারেরও দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ৪ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবীণ রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিচার আজও হয়নি। আর সেই বিচারহীনতার ঘটনার প্রণোদনাতেই এসব সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্মল রোজারিও, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে প্রমুখ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: