
ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা অনুষদের শিক্ষক কতৃক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৩রা ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে উক্ত শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ২০২২-২৩ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে উক্ত বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। জানা যায়, হল সংক্রান্ত কাজে সহযোগিতার জন্য পরিচালক স্যারের রুমের সামনে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। পাশ্ববর্তী রুম থেকে বের হয়ে অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম ঐ ছাত্রীকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তার রুমে নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা শুরু করেন এবং তার শরীরের আপত্তিকর স্থানসমূহে হাত দেয়ার চেষ্টা করেন। তখন ঐ ছাত্রী রুম থেকে দ্রুত বাইরে চলে আসে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, অনতিবিলম্বে উক্ত শিক্ষকের এমন ন্যক্করজনক কর্মকান্ডের তদন্ত করে তাকে অনুষদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, ইতোপূর্বে আরো অনেক শিক্ষার্থী এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। এই শিক্ষক প্রতিনিয়ত মেয়ে শিক্ষার্থীদের উত্যক্তকরণ এবং বিভিন্ন প্রলোভোনের মাধ্যমে তার সাথে খারাপ কাজের প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। কিন্তু যখনই কেউ প্রতিবাদ করতে চেষ্টা করে, তাদেরকে ভয় - ভীতি প্রদর্শন করে দমিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এবারে তার এই অপকর্ম ফাস হয়েছে। তাই আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে তাকে সমাজকল্যাণ অনুষদের শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
সমাজকল্যাণ অনুষদের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত। আমাদের নির্ভরতার জায়গা আমাদের শিক্ষকরা। কিন্তু সমাজকল্যাণ বিভাগের এই শিক্ষক নামের কুলাঙ্গার নিজের অনুষদের ছাত্রীকে রুমে ডেকে সাহায্যের নামে যৌন নিপীড়ন করেছে। আমরা তার এমন হীন কর্মের ধিক্কার জানাই। এর পূর্বেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন শুধু তদন্ত কমিটির দোহাই দিয়ে বিলম্ব করছে। আমরা বলতে চাই আর কোন বিলম্ব নয়, অতিসত্বর উক্ত শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। একইসাথে, ওই শিক্ষকের উদ্দেশ্যে বলবো আপনার বিরুদ্ধে শাস্তি আসার পূর্বেই আপনি নিজে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো।
একই অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী আবদুল কাদের বলেন, এরকম ঘটনা আজকে প্রথম নয়। এর আগেও আরো অনেককে ওই শিক্ষক খারাপ প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করতে চাইলে বিভিন্ন ভীতি প্রদর্শন এবং পরীক্ষায় ফেল করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তাই অনেকে চুপচাপবিষয়টি মানিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবারে যে বোনকে নিপীড়ন করা হয়েছে, তিনি সাহস করে এই মেনে নেয়া এবং মানিয়ে নেয়ার সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে এস তার অপকর্ম প্রকাশ করে দিয়েছেন। তাই আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে ভিসির বাসভবনের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। পরবর্তীতে ভিসি যৌন হয়রানির বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানান এবং তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: