ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১

ছিনতাইকে কেন্দ্র করে ট্রাক বাস ভাংচুর

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারী ২০১৮ ১২:১৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারী ২০১৮ ১২:১৮

 

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কাপ্তাই সড়কে পাহাড়তলি চৌমুহনী হতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় শত শত গাড়ি আটকা পড়লে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল ইসলাম সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ক্যাম্পাসে ফেরার সময় ছিনতাইয়ের শিকার হয়।

আরিফুল ইসলাম ছিনতাইয়ের শিকার বলেন, রাতে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় রাউজানের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের দমদমা বাজার এলাকায় গলায় ছুরি ধরে তাঁর দুটি মোবাইল নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এতে অটোরিকশার চালক ও যাত্রীবেশে থাকা তাঁর দুজন সহযোগী জড়িত ছিলেন।

এ ঘটনায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় তাঁরা সিএনজি চালিত ১৫টি অটোরিকশা,৩টি ট্রাক ও ২টি বাস ভাঙচুর করে। রাত আটটার দিকে রাউজান থানার পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, উপছাত্রকল্যাণ পরিচালক ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে রাত সাড়ে আটটায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আবার যান চলাচল শুরু হয়।

এরপর রাতে রাউজানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, উপছাত্র কল্যাণ পরিচালক, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সমঝোতা বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপছাত্র কল্যাণ পরিচালক জি এম সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘বৈঠকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’বেতাগীর অটোরিকশা চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ‘মিঠুন দাশ নামের এক অটোরিকশা চালক ভাড়া নিয়ে চুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকলে তাঁকে শিক্ষার্থীরা আটকে রেখে সমিতির লোকজনকে ক্যাম্পাসে আসার কথা জানায়। পরে খবর পেয়ে আমরা ক্যাম্পাসে গেলে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কথা বলার সুযোগ হয়নি। এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ১০-১২টি অটোরিকশা ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে ভাঙচুর করে।’

অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেল সরকার বলেন, ‘ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রতিবাদে আমরা বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শান্তিপূর্ণ অবরোধ শুরু করি। পরে সন্ধ্যা সাতটায় স্থানীয় লোকজন ১০-১২টি মোটরসাইকেল নিয়ে চুয়েট গেটে এসে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে তিন শিক্ষার্থী সামান্য আহত হন। এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাঙচুর করে।’ রাউজানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রাত দশটায় বলেন, ‘এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা। এতে ১৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা,৩টি ট্রাক ও ২টি বাস ভাঙচুর করা হয়। আমরা সমঝোতায় বসে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। দুই প্লাটুন পুলিশ ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থানে আছে।’রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ছাত্রদের অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চুয়েট পুলিশ ফাঁড়ি, নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি ও রাউজান থানার পুলিশ কাজ করছেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: