ঢাকা | শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিএনপির মাথায় শয়তানি বুদ্ধি ছাড়া ভালো কিছু নেই- যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারী ২০১৮ ১৬:১৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারী ২০১৮ ১৬:১৯

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি শয়তানের দল, বেগম খালেদা জিয়া এ দলের নেত্রী  আর কর্নেল অলি তাদেরই একজন অংশীদার। বিএনপির মাথায় শয়তানী বুদ্ধি ছাড়া ভালো কোন বুদ্ধি নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই তাদের এই কু’বুদ্ধির মাত্রাটি বেড়ে যায়। বেগম জিয়া ও কর্নেল অলিরা যে কোনভাবেই এ দেশকে তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশের জনগণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাদের সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছিল।

গতকাল ৬ জানুয়ারি চন্দনাইশ উপজেলা ও উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা যুবলীগের যৌথ উদ্যোগে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক যুবসমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন বিএনপি নামের দলটি গণতন্ত্রের নামে যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে চরম অপরাধ করেছে।

যে অপরাধের কোন ক্ষমা নেই। তিনি বলেন দেশের জনগণ তাদেরকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবেই। এসময় তিনি কর্ণেল অলির সমালোচনা করে বলেন– ভন্ডামী অনেক করেছেন, এবার মিথ্যার বেসাতী ছাড়ুন। উন্নয়নের নামে মানুষকে মিথ্যা বলে অনেক ধোকা দিয়েছেন, আওয়ামী দলীয় নেতাকর্মীদের অনেককেই মেরে হাত–পা ভেঙ্গেছেন, যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এবার আর রেহাই নেই, আপনার ষড়যন্ত্রের দিন শেষ হয়ে গেছে। চন্দনাইশ সাতকানিয়ার মানুষ তাদের আপনজন কে তা বুঝে গেছে। তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার জন্যও যুবলীগ কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিএনপিকে চোর ডাকাত ও চাপাবাজের দল অভিহিত করে তিনি বলেন– জিয়া হাঁ না ভোটের ব্যবস্থার মাধ্যমে ভোট নিয়ে যে চিনিমিনি খেলার জন্ম দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া ভোট ডাকাতির মাধ্যমে সেটি পাকাপোক্ত করেছিলেন। বিএনপির কাছে দেশ ও জনগণ কোনটিই যে নিরাপদ নয় তা অনেক আগেই প্রমাণিত হয়েছে। আর তাই দেশের জনগণ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনি আরো বলেন– বিএনপির আমলে বিদেশ থেকে প্রতিবছর খাদ্য আমদানী করতে হতো, আর শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে খাদ্য রপ্তানী করে বুঝিয়ে দিয়েছে দেশ কিভাবে পরিচালনা করতে হয়। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে উল্লেখ করে যুবলীগ চেয়ারম্যান আরো বলেন– দৃশ্যমান উন্নয়নের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন, সংস্কৃতি ও মেধা মননের উন্নয়ন একইসাথে সাধিত হওয়ায় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ প্রশংসিত।

জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের আইনশৃংখলা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন– জাতিসংঘ ইতিমধ্যে জাপান, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, ইন্দোনেশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশকে জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপগুলো অনুসরন করতে বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিকে শেখ হাসিনার জন্য একটি মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ঘটনা সারাবিশ্বে আজ প্রশংসিত হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন দেশের জন্য ইউনুস কি করেছেন? তাকে নোবেল দেয়া হলো। তিনি বলেন কাজ করতে হলে নোবেল প্রাইজের দরকার নেই এখন নোবেল ওয়ার্কারেরই প্রয়োজন। শেখ হাসিনাই এখন সেই নোবেল ওয়ার্কার। দীর্ঘ একঘন্টা ৩৫ মিনিটের বক্তব্যে যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতিবাদী হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন মেধা ও আদর্শের মাধ্যমে জ্ঞানী হয়েই দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। তিনি বলেন যৌবনকালে ধনদৌলতের আশা না করলেই দেশপ্রেমিক হওয়া সম্ভব। তিনি যুবলীগের নেতাকর্মীদেরকে মানুষের আস্থা অর্জন করে রাজনীতির লক্ষ্যে পৌঁছানোর আহবান জানান। তিনি বলেন– বঙ্গবন্ধু ৩৪ বছর বয়সে মন্ত্রী হয়েছিলেন এবং ৫০ বছর বয়সে ৭০’র নির্বাচনে জয়লাভ করে জনগণের অবিসংবাদিত নেতা হতে পেরেছিলেন শুধু দেশ এবং জনগণকে ভালোবাসার কারণে। আর মাত্র ৩১ বছর বয়সে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের মতো বৃহত্তম দলের সভাপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়ে যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা হিসাবে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি বলেন বিপ্লবের পর বিপ্লব আসবে, আর সেই বিপ্লবে সামিল হয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য যুবলীগের নেতাকর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

কারণ এই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশীয় অর্থেই নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু, বাস্তবায়ন হয়েছে গঙ্গার পানিচুক্তি, পার্বত্য শান্তিচুক্তিসহ অসংখ্য উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ড। আর সে কারণেই সারাবিশ্ব আজ শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আজ শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হচ্ছে।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন– যুবকদের লেখাপড়া শেষ করতেই যেখানে ২৭/২৮ বছর চলে যায় সেখানে মাত্র ৩০ বছর বয়সে অর্থাৎ মাত্র দু’বছরে আবেদন নিবেদন করে কিভাবে চাকরি পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন আধুনিক বিশ্বের অনেক দেশের মতো চাকরির সীমাবদ্ধ বয়সসীমা বাতিল করে যে কোন বয়সে চাকরিতে যোগ দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য পার্লামেন্ট এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহবান জানান। আর তা করা হলে যে কোন বয়সে নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে মানুষ চাকরি খুজে নিতে পারবে। এরআগে যুব সমাবেশ উদ্বোধন করেন সাংসদ আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী।যুবলীগ চন্দনাইশ উপজেলা কমিটির আহবায়ক তৌহিদুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান আতা, সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম বদি, দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান, পৌর মেয়র আলহাজ্ব মাহাবুবুল আলম খোকা, নগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী। বিশেষ বক্তা ছিলেন দক্ষিণ জেলা সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথী চৌধুরী, উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা যুবলীগের সভাপতি আ স ম ইদ্রিস, সাধারন সম্পাদক ওসমান আলী। চন্দনাইশ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক এ এস এম মুছা তছলিম ও মুরিদুল আলম মুরাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মীর মোহাম্মদ মহিউদ্দীন, মোহাম্মদ সেলিম উদ্দীন, জাহাঙ্গীর আলম, কায়কোবাদ ওসমানী, আরিফুর রহমান, গিয়াসুদ্দিন সুজন, জাহেদুর রহমান সোহেল, উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম রাশেদ, মহনগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম, মাহাবুবুল হক সুমন, শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী, অধ্যাপক কৃষ্ণ প্রসাদ ধর, নাজিম উদ্দীন, সেলিম উদ্দীন, আবদুল্লাহ আল নোমান বেগ ও বেলাল হোসেন মিঠু।

এদিকে আমাদের বোয়ালখালী প্রতিনিধি জানান– যুবলীগের চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, খালেদা জিয়া চাই শেখ হাসিনাকে হত্যা ও দেশে বিশৃঙ্খলা করে ক্ষমতায় যেতে, আর শেখ হাসিনা চাই আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে। তাই খালেদা জিয়াকে আপ্যায়নের জন্য বঙ্গভবনে দাওয়াত করে ও মন্ত্রীর দপ্তরের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হতে হয়। খালেদা ক্ষমতায় গেলে লুটপাট এবং ক্ষমতা হারালে জ্বালাও পোড়াও করেন, আর শেখ হাসিনা উন্নয়ন করেন। দু’জনের মধ্যে পার্থক্য এটুকুই। গতকাল শনিবার বোয়ালখালী উপজেলা যুবলীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি যদি নির্বাচন না হতো তাহলে দেশ তালেবান রাষ্ট্র হয়ে যেত, যোগাযোগ,শিক্ষা প্রযুক্তি,কৃষি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশের মানুষ এত উন্নয়ন চোখে দেখতেন না। তিনি যুবলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন–জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হলো যৌবনকাল। এ সময়েই ঠিক করতে হয় কোনটি ভালো, কোনটি খারাপ। বিজ্ঞান মনস্ক যুব সমাজ গঠনে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অপরের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার নামই হচ্ছে কর্তব্য। তাই সমাজের প্রতি, পরিবারের প্রতি ও দেশের প্রতি কর্তব্য পালন করতে হবে। বোয়ালখালীর গোমদন্ডী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উক্ত যুবসমাবেশের উদ্বোধন করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণির সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান আতা, সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম বদি, দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান, সহ–সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কার্য নির্বাহী সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, কায়কোবাদ ওসমান, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ.ম.ম টিপু সুলতান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাাদক অধ্যাপক পার্থ সারথি চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন মো. এমরান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ হায়দার শাহীন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জহিুরুল আলম জাহাঙ্গীর।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: