পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নদী ও খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। এসময়ে যে কাজটা আমরা করতে পারবো অন্য সময়ে সে কাজটা অনেক স্লো হয়ে যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আজ বুধবার সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্ট এবং ক্রসবার-৩ এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, যমুনা নদীটির প্রকৃতিই এমন যে এটি সব সময় ভাঙ্গা-গড়ার মধ্যে থাকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আগামী জানুয়ারী মাসের মধ্যে গণশুনানী করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন কোন প্রকল্প নেয়া যাবে তার তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য।
উপদেষ্টা রিজওয়ান হাসান আরও বলেন, যেহেতু এখন রাজনৈতিক সরকার দায়িত্বে বা ক্ষমতায় নেই, সেহেতু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসগুলোকে গণশুনানী করে প্রকল্পের তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন এবং উপদেষ্টা নিজেই সেই গণশুনানীতে উপস্থিত থাকবেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বাজেটের তুলনায় নদী ভাঙ্গনের প্রবণতা এবং ব্যাপকতা অনেক বেশী। আর তাই আগামীতে যে রিসোর্স বা বাজেট এই মন্ত্রণালয় পাবে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেসকল জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করা দরকার সে সকল জেলায় সুষম বণ্টন করা হবে এবং কেউ যেন মনে না করে যে তার এলাকা অবহেলিত থেকে যাচ্ছে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, নদীতে যেসকল নতুন চর জেগে উঠে সেখানে ভূমিহীনদের জায়গা দেয়া এবং বনায়নের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমাদের সকলকে ভাবা উচিত। নদীতে জেগে উঠা নতুন চরে শিল্প স্থাপন করতে দেয়া হলে নদী যে দূষণ হয় এ বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, গতকালই মন্ত্রণালয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, যে পরিকল্পনাই করা হোকনা কেন বা যে প্রকল্পই হোকনা কেন, পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত ঠিকাদারের যা কেনার কথা তা সে কিনছে কিনা, প্রকল্পে যত টাকা লাগার কথা আদৌ তত টাকার বাজেট দেয়া হয়েছে, নাকি বেশী বাজেট দেয়া হয়েছে, যে মানের জিনিস দেয়ার কথা সে মানের জিনিস দেয়া হচ্ছে কিনা এগুলো নিশ্চিত করার জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে এবং সেই কমিটিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার একজন ব্যক্তি বা একজন শিক্ষার্থীকে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। আর কমিটির প্রধান হবেন সরকারের বাইরের একজন ব্যক্তি।
উপদেষ্টা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় "লৌহজং নদীর ভাঙ্গন হতে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর আওতাধীন কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা রক্ষা" শীর্ষক প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও যুবকদের অংশগ্রহণে ১ নভেম্বর হতে সারাদেশে একযোগে ৬৪ জেলায় ৬৪ টি খাল বা জলাশয় পরিচ্ছন্নকরণ ও দূষণমুক্তকরণ অভিযান শুরু হয়েছে যা ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
দুটি স্থান পরিদর্শন কালে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান, সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইল সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমানসহ টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সুত্র : বাসস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: