
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুরে ডিসি’র নির্দেশে ইউএনও’র হটকারিতায় বিচ্ছিন্নকৃত সেচ স্কীমে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে।
এতে স্কীমের আওতাভূক্ত শতাধিক বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদনকারী কৃষকদের মাঝে স্বস্থ্যি ফিরে এসেছে। অপরদিকে ফসলের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ৬ ঘন্টার মধ্যেই পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ায় এলাকাবাসীর কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী।
উল্লেখ্য, উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন না থাকায় গত শনিবার বিকেলে শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের খাদাস গ্রামের গোকুল চন্দ্র প্রামাণিকের ২৭ বছরের একটি পুরনো সেচ স্কীমের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান।
এতে ওই স্কীমের আওতাভূক্ত শতাধিক বিঘা ফসলী জমির মালিকেরা (কৃষক) বিপাকে পড়েন। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী ইমাম ইনোকী হতাশাগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ান।
তার নেতৃত্বে রোববার দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে হতাশাগ্রস্ত কৃষকেরা সেচ স্কীমের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ এবং সেচ যন্ত্র ভাংচুরে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারক লিপি পাওয়ার পর উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
সেই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গতকাল বিকেল সোয়া ৪টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম। তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু আইন দিয়ে নয়, যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মানবিকতাকেও গুরুত্ব দিতে হয়।
বৈঠক শেষে কৃষি ফসল উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলতি মৌসুমে গোকুল চন্দ্র প্রামাণিকের সেচ স্কীমে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত স্কীম মালিক সেচ যন্ত্র ভাংচুরের ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তা প্রত্যখ্যান করা হয় এবং তাকে নিজ খরচে মেরামত করে নিতে বলা হয়। যেমন সিদ্ধান্ত তেমনই কাজ! গতকাল বৈঠক শেষ হতে না হতেই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সেই সেচ স্কীমে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বিদ্যুৎ কর্মিরা।
অপরদিকে স্মারক লিপি প্রদানের পর মাত্র ৬ ঘন্টার ব্যবধানে কৃষকদের সমস্যার সমাধান হওয়ায় শাজাহানপুরের কৃষকেরা বগুড়া জেলা প্রশাসকের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। উক্ত বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, বিএডিসি’র একজন প্রকৌশলী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আলী ইমাম ইনোকী, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সোহরাব হোসেন সান্নু, গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু, সেচ স্কীম মালিক গোকুল চন্দ্র এবং তার প্রতিপক্ষ কাওছার তালুকদার, স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী, একদল কৃষক ও উৎসুক জনতা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: