
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার কমিশনে দেয়া প্রস্তাব একসাথে করে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো প্রকাশে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগার কথা নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যে সব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা দরকার।’
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতীয় নির্বচন ডিসেম্বর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ারও দরকার নেই। ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে, জাতীয় সনদে সই করে ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না, বরং এর আগেই নির্বাচন করা সম্ভব।’
তিনি আজ রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে বিএনপি’র লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
এই বৈঠকে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, দলের ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু এবং গণ অধিকার পরিষদের পক্ষে দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সহসভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসানসহ দলটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘ঐকমত্য কেউ সৃষ্টি করছে না, সবাই সবার মতামত দিয়েছে। সুতরাং যেসব জায়গায় ঐকমত্য হবে, সেগুলো শুধু আমরা সংস্কারের মধ্যে নিয়ে আসবো। আর যেগুলো ঐকমত্য হবে না, সেগুলো নির্বাচনের পরে যার যার ম্যান্ডেটের জন্য যাবে এবং ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে এসে এটা পাস করা হবে।’
সংস্কার’র কথাটা খুবই পরিষ্কার, না বোঝার কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বুঝে-শুনেও না বুঝলে সেটা কোনো সমাধান হতে পারে না। তাই, অতিসত্বর আমরা সংস্কারের প্রশ্নে ঐকমত্য নির্ধারণ করে জাতীয় সনদ সই করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি এবং এটি করা অবশ্যই সম্ভব বলে আমি মনে করি।’
বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিপীড়িত দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি বিচারের দাবি রাখে উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, বিচার বিভাগ বিচার করবে। সে জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
এদিকে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যতের জন্য, গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত। ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন গেলে সেটি দেশে আরেকটা সংকট তৈরি করতে পারে, নানান বাস্তবতায় আমরা সেটি পর্যবেক্ষণ করছি।’
সংস্কারের প্রসঙ্গ তুলে নুরুল হক বলেন, ‘যেহেতু ঐকমত্য কমিশনের কাছে দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছে, তারা সে মতামতের ভিত্তিতে একটা জুলাই চার্টার করে এক-দু’মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে পারে। ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা নির্বাচনের একটা সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চাই।’
ডিসেম্বর থেকে জুন রাজনীতির মাঠে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘আমরা বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরিষ্কার করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে, বিজয়ের মাসে আমরা বাংলাদেশের একটা নতুন বিজয় উদ্যাপন করতে চাই।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: