odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Tuesday, 28th October 2025, ২৮th October ২০২৫

উন্নত দেশগুলোকে যথাযথভাবে জলবায়ু দায়িত্ব পালনের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৩ July ২০২৫ ১৮:১৬

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৩ July ২০২৫ ১৮:১৬

বৈশ্বিক অংশীজনদের প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান গ্রহণে এবং উন্নত দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ সকালে ‘জলবায়ু পরিবর্তনে সম্প্রদায় ও বাস্তুতন্ত্রের সহনশীলতা বৃদ্ধি’- এই প্রতিপাদ্যে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত মেঘনা নলেজ ফোরামে (এমকেএফ-২) ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বের উন্নয়ন ভাবনাকে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। এটি কম প্রতিকূল, কম সম্পদ-কেন্দ্রিক ও আরও বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক হতে হবে।’

বাংলাদেশের নদী ও জাতীয় পরিচয়ের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্ককে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে নদীর দেশ বললে ভুল হবে না। নদী ও নদীর পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’

উপদেষ্টা প্রতিবেশী দেশ—নেপাল, ভারত ও চীনের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনায় আরও জোরালো আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের চারটি প্রধান নদী অববাহিকা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করা— ফলে সহযোগিতামূলক পরিবেশ শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।

উপদেষ্টা আরো বলেন, আমাদের নদীগুলোকে শুধু নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নয়, বরং তাদের নিজস্ব অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েও রক্ষা করা উচিত।

তিনি উল্লেখ করেন যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিচারব্যবস্থা ইতোমধ্যে নদীর অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে এবং আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতেও এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি বিশেষ ভৌগোলিক ও পরিবেশগত অঞ্চল হাওর সম্পর্কে বলেন, ‘হাওর বাংলাদেশের একটি অনন্য প্রতিবেশব্যবস্থা।’ 

কৃষি, মাছ চাষ, পর্যটন ও পরিযায়ী পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে হাওর অঞ্চলের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন তিনি। 

তবে হাওর ও মেঘনা অববাহিকায় আজ পরিবেশ দূষণ, বালু উত্তোলন, অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন ও ঘনঘন আকস্মিক বন্যার হুমকির মুখে রয়েছে বলে উপদেষ্টা সতর্ক করেন। 

প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কার্যকরভাবে পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি এবং এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার যুব সমাজকে তথ্যপ্রবাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রথম দক্ষিণ এশীয় দেশ হিসেবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নদী ও হ্রদ সুরক্ষা সংক্রান্ত কনভেনশন-এ সম্পৃক্ত হয়েছে, যা এই অঞ্চলে পরিবেশ নেতৃত্বের অন্যতম দৃষ্টান্ত। 

তবে আঞ্চলিক সংস্থা সার্ক এখনো নদী বিষয়টিকে বহুপাক্ষিক নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে— যা আঞ্চলিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্যের শেষে উপদেষ্টা বলেন, ‘যখন সরকারগুলো পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তখন এ ধরনের ফোরামগুলোতে কমিউনিটির কণ্ঠস্বর ও জ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সহযোগিতাই জলবায়ু সহনশীলতার পথ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: