odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২

জাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:১৯

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:১৯

অধিকার পত্র ডটকম | ক্যাম্পাস প্রতিবেদক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদের ভোট। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।

ভোটার ও প্রার্থী

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে মোট ১১ হাজার ৭৪৩ জন শিক্ষার্থী আজ ভোট দেবেন। এর মধ্যে ছাত্রী ৫,৭২৮ জন এবং ছাত্র ৬,০১৫ জন

  • কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৭ জন প্রার্থী।
  • একই সঙ্গে ২১টি হল সংসদেরও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ভোটকেন্দ্র ও বুথ

প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ২২৪টি বুথে ভোট হবে। প্রতিটি হলে ভোটগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা

নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, আনসার ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছেন।

কেন এত বছর নির্বাচন হয়নি?

জাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯১ সালে। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে নানা কারণে আর ভোট হয়নি।

  • প্রশাসনিক জটিলতা
  • রাজনৈতিক অস্থিরতা
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে দলীয় দ্বন্দ্ব
    এসব কারণে বারবার নির্বাচন আয়োজন স্থগিত হয়। ফলে প্রায় তিন দশক ধরে জাকসু কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করতে পারায় আনন্দিত। অনেকেই আশা করছেন, এই নির্বাচন ক্যাম্পাস রাজনীতিতে নতুন ধারা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনবে। শিক্ষার্থীদের মতে, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে একটি কার্যকর ছাত্র সংসদ গড়ে উঠলে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।

বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি ছাত্র ও ১০টি ছাত্রী হলের ২১টি কেন্দ্রে মোট ২২৪টি বুথে ভোট নেওয়া হচ্ছে।

সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা যায়। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে ব্যালট বাক্সগুলো সিলগালা করেন।

জাকসুর ইতিহাসে এ প্রথম বারের মতো নির্বাচনে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) প্রযুক্তি-ভিত্তিক ব্যালট ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিকে ৩৩ বছর পর এই নির্বাচনে অংশ নিতে পেরে অনেক নতুন ভোটার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

প্রথমবারের মতো ভোট দিয়ে নুসরাত জাহান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নিজের ইচ্ছেমতো ভোট দিতে পারাটা সম্মানের। এত দীর্ঘ বিরতির পর এমন পরিবেশে ভোট দিতে পারা সত্যিই উৎসাহব্যঞ্জক।’

আরেক শিক্ষার্থী মাহফুজ রহমানও একই ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক আগেই ভোটার হলেও পছন্দের প্রার্থীকে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাইনি। এ প্রথম আমি জাকসু নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করেন, উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।

নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে ৬৭ জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন এবং একই সংখ্যক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সহকারী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ভোট গণনা করা হবে।

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে দেড় হাজার পুলিশ সদস্য, সাত প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পাঁচ প্লাটুন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাহিরে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও মোতায়েন রাখা রয়েছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষণা দেয়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত মীর মশাররফ হোসেন হলের গেট ও প্রান্তিক গেট ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথ বন্ধ থাকবে।

এছাড়া, পুরনো পরিবহন এলাকার টারজান পয়েন্ট, নতুন কলা ভবনের পাশে মুরাদ চত্বর, প্রান্তিকের উত্তর পাশের কাপড়ের মার্কেট ও প্রধান ফটকের আশপাশের অস্থায়ী দোকানপাট আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

তবে, হলের ক্যান্টিন ও ভেতরের দোকান খোলা থাকবে, পর্যাপ্ত খাবারের সরবরাহও নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে আগামীকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ইন্টারনেটের মতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞায় ছাড় দেয়া হবে



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: