
অধিকার পত্র ডেস্ক
৩ অক্টোবর,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৬। ব্যালট পেপারে ব্রেইল পদ্ধতি যুক্ত করা হবে কিনা, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন।
তাদের ভোট দিতে হবে কীভাবে এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন সমকালকে বলেন, ইপসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ব্যালটে ব্রেইল যুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
প্রাথমিকভাবে কমিশন জানিয়েছিল, ভোট দেওয়ার সময় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা একজন প্রতিনিধিকে সঙ্গে রাখতে পারবেন। তবে এতে শিক্ষার্থীরা আপত্তি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, প্রতিনিধি নিজের মতাদর্শ অনুযায়ী ভোট দিয়ে দিতে পারেন। প্রতিবন্ধী ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক মো. নাদিম হোসেন বলেন, আমরা ব্রেইল ব্যবহারে অভ্যস্ত। ব্যালটে তা না থাকলে ভোটাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
প্রতিবন্ধী ছাত্রসমাজ গত ১৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তোলেন। এর মধ্যে ছিল কেন্দ্রীয় সংসদে একটি পদ ও প্রতিটি হলে অন্তত একটি পদ সংরক্ষণ, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিবন্ধীবান্ধব করা এবং ভোট প্রক্রিয়ায় বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা।
নেতারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও গঠনতন্ত্রে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে শামসুন্নাহার হলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী শেখ সাদিয়া সিদ্দিকা ভিন্ন উদ্যোগ নেন। তার হলে চারজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী থাকায় তিনি নিজের ব্যালট নম্বর ব্রেইল লিপিতে ছাপান। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ব্রেইল প্রেস না পেয়ে চুল আটকানোর পিন দিয়ে ব্রেইল বানিয়েছি। আমার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দেওয়া। আমার মূল লক্ষ্য কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ব্রেইল প্রেস প্রতিষ্ঠা করা।
আসন্ন নির্বাচনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল সংসদে এ এফ রহমান হলে নির্বাহী সদস্য পদে লড়ছেন নাদিম হোসেন। কেন্দ্রীয় সংসদে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছাত্রদল সমর্থিত মিজান মিয়া। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ এফ রহমান হলে লড়ছেন মো. শান্ত হোসেন। কেন্দ্রীয় সংসদে সমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়ছেন মোহাম্মদ সোহেল রানা, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মো. সুরত আলম। সম্প্রীতির শিক্ষা জোট থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে লড়ছেন আকাশ দাস।
আগামী ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টায় শুরু হবে চাকসুর ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, চাকসু ও হল সংসদে চূড়ান্ত প্রার্থী ৯০৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪১৫ জন এবং হল সংসদে ৪৮৬ জন। খসড়া ভোটার তালিকায় শিক্ষার্থী আছেন ২৭ হাজার ৫২১ জন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: