
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যার স্মরণে আজ রাত ৯টা থেকে ৯টা এক মিনিট পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের হাজার হাজার মানুষ আলোহীন (ব্ল্যাকআউট) কর্মসূচি পালন করেছে।
রাজধানীর শ্যামলীর বাসিন্দা জাহিদ হোসেন বাসসকে জানান, হাজার হাজার মানুষ রাত ৯টায় তাদের বিদ্যুতের বাতির সুইচ বন্ধ করে এক মিনিট আলোহীন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
তিনি জানান, স্বাধীনতা ঘোষনার আগ মুহূর্তে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বর হামলায় শহীদদের প্রকৃতভাবে বাংলাদেশ স্মরণ করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ কাল রাতে নিরস্ত্র বাঙ্গালীর ওপর সার্চলাইট অভিযান শুরুর পরপরই বঙ্গবন্ধু হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে দেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেন।’
তিনি জানান, ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি পালনের সময় সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বেশির ভাগ মানুষ তাদের বিদ্যুতের সুইচ অফ করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদদের স্মরণ করে।
এর আগে ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষনা করে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন সংগঠন ২৫ মার্চের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি পালন করে।
এদিকে গত ১১ মার্চ ২৫ মার্চ কালরাতে নিহতদের স্মরণে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে এক মিনিট সব ধরনের বাতি বন্ধ রাখার কর্মসূচি গ্রহণ করে সরকার।
গণহত্যা দিবসে এক মিনিট বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখাসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি পাঠায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে জানানো হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এবং সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মাধ্যমে গণহত্যা দিবসে এক মিনিট ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি পালন করতে হবে।
বাঙালির মুক্তির আন্দোলন নস্যাৎ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় বিশ্বের ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: