
সিরাজদিখান(মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
এটি জাতীয় সংসদের ১৭১ নং আসন। মুন্সীগঞ্জ-১ আসনটি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর-সিরাজদিখান উপজেলা নিয়ে গঠিত। শ্রীনগর উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৮ হাজার । এর মধ্যে পুর“ষ ও মহিলা ভোটার প্রায় সমান । সিরাজদিখান উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ১৪ হাজার । এর মধ্যে পুর“ষ ভোটার ১ লক্ষ ৯ হাজার ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৫ হাজার ।
এ আসনে জাতীয় পার্টি নিষ্ক্রিয়। বিকল্পধারার অব¯’াও একই। এক সময় প্রবাদ ছিল বিক্রমপুরের মাটি বিএনপির ঘাটি বিএনপির ঘাঁটি কিন্ত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে বর্তমানে খানে আওয়ামী লীগের আধিপত্য বিরাজ করছে।
ঐতিহাসিক বিক্রমপুরের প্রবেশদ্বার মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকের নাম শুনা গেলেও বর্তমান সাংসদ বাবু সুকুমার রঞ্জন ঘোষ অসু¯’তাজনিত কারণে মনোনয়ন না পেলে ২ বারের সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান ও ২ যুগের উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির সহ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগনেতা গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ও সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির স্বা¯’্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: বদিউজ্জামান ডাবলুর নাম শুনা যা”েছ ব্যাপকভাবেই । প্রচার প্রচাররনায় কেউ পিছিয়ে নেই ।
অনেকদিন থেকেই মহিউদ্দিন আহমেদ মাঠে থাকলেও ইদানিং গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, বদিউজ্জামান ডবলুকেও মাঠে দেখা যা”েছ । ডা: ডবলুর সফর সঙ্গী হিসেবে তার সাথে কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসীকেও দেখা যা”েছ । সিরাজদিখানের তালতলা বাজারে গণ সংযোগে সিরাজদিখান থানা পুলিশের ১নং ওয়ান্টেড আসামী মামুন আহমেদ ও তার সহযোগী নুর“র কাঁদে হাত রেখে চলতে দেখা গেছে । এতে তালতলা এলকায় ডা: ডাবলুকে নিয়ে বিতর্কর তৈরী হয়েছে । এছাড়াও ৩ মার্চ,২০১৮ তারিখে শ্রীনগরে গণ সংযোগকালে ডা“ ডাবলুর কর্মীদের দ্বারা পরিবহন শ্রমিকদের মারধরের ঘটণাও ঘটে । তিনি চিত্রকোটের গোয়ালখালী শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিউদ্দিন সফিকেও সফরসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন । সে এলাকায়ও একই অব¯’া ।
যতদুর জানা যায়, আগামী নির্বাচনে দলের যোগ্য, ত্যাগী ও জনগণবান্ধব ব্যক্তিকেই চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দিবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ। ভাল ইমেজের সাহসী, ত্যাগী নেতাদের দিকে দৃষ্টি থাকবে দলটির হাইকমান্ডের। তারই ধারাবাহিকতায় সারা দেশের ন্যায় মুন্সীগঞ্জ-১ আসনেও পিছিয়ে নেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা । তেমন কোন বদনাম না থাকলেও বর্তমান সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষের অসু¯’তার সুবাদে যেন মনোবল দৃঢ় হ”েছ অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের । শারীরিক অসু¯’তাই বাবু সুকুমার রঞ্জন ঘোষের প্রধান প্রতিপক্ষ । তার অনুপ¯ি’তির কারণে শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার উন্নয়ন কাজে ভাটা ও প্রশাসনিক কাজে স্বে”ছাচারিতার প্রশ্ন ওঠে। দুই উপজেলায় কয়েক শত অনুষ্ঠানের ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে তার নাম থাকলেও তিনি কোনো অনুষ্ঠানে উপ¯ি’ত থাকতে পারেননি। সাংসদের অনুপ¯ি’তিতে তার সমর্থকরা মুন্সীগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যা”েছন ।
তিনি ব্যক্তি জীবনে সৎ, মেধাবী, ধনকুবের ও ক্লিনইমেজের অধিকারী । মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনসাধারনের সাথে তার ভাল যোগাযোগ রয়েছে । তিনি সকলেরর প্রিয় দাদা হিসেবেই রয়েছেন ।
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ বলেছেন, আগামী নির্বাচনে নমিনেশন প্রাপ্তিতে তিনি শতভাগ আশাবাদী। তিনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। জয়ের ব্যাপারে কঠিন কোনো সমস্যা হবে না। তিনি এলাকায় কাজ করে ব্যাপক সাড়া জাগানোই এলাকার ভোটাররা তাকে পছন্দ করছেন এবং ভোটও নৌকা মার্কাকেই দেবেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, তাই নমিনেশন যে কেউ চাইতেই পারে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন, শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির(একাংশ) সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শিল্পপতি মমিন আলী ও সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও মাটি মানুষের নেতা আব্দুল কুদ্দুস ধীরনের নামও শোনা যা”েছ । শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন নির্বাচনে না এলে আব্দুল কুদ্দুস ধীরন আগ্রহ প্রকাশ করেন । বিএনপি নেতাদের তেমন কোন গণ সংযোগ চোখে পড়েনা । তবে প্রবীন নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের ক্ষমতায় থাকাকালীন উন্নয়ন কর্মকান্ড ও শক্তিশালী সাংগাঠনিক কার্যক্রম থেকে দেখা যায় সে মনোনয়ন পেলে জমে উঠতে পারে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের জাতীয় নির্বাচন । কেননা ২ উপজেলায়ই রয়েছে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সমান বিচরন ও পদচারনা । তিনি অনেক উন্নয়নও করেছেন এ আসনে ।
এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দেশে নির্বাচনের কোনো পরি¯ি’তি নেই, ইলেকশনও দেখছি না।
স্বে”ছাসেবক দল, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বে”ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি মীর সরফত আলী সপুও মাঠে রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দলীয় নমিনেশন চেয়ে আসছেন। এলাকায়ও রয়েছে তার বেশ যোগাযোগ। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তার বির“দ্ধে প্রায় দুই শতাধিক মামলা হয়েছে।
স্বে”ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু বলেন, বাংলাদেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারাগারের নির্জন সেলে রাখা হয়েছে। তাকে মুক্তি দেয়া এবং সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচনে দল তাকে বিবেচনা করবে। এই সরকারের বির“দ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণসহ তার বির“দ্ধে দুই শতাধিক মামলা হয়েছে।
বিকল্প ধারায়ও রয়েছে হেভিওয়েট প্রার্থী । ব্যঞ্জনবর্ণর চন্দ্রবিন্দুর মত অন্যের কাঁধে ভর করেও অঘটন ঘটাতে পারে বিকল্প ধারা । কারও সাথে জোট বেধে অঘটন ঘটাতেও পারে মুন্সীগঞ্জ -১ আসনে এই বিকল্পধারা । কেননা তাদের ২৫-৩০ হাজার রিজার্ভ ভোট রয়েছে । । এটাও বিবেচনায় আনতে হবে আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারকদের । কেননা আজ আওয়ামীলীগের জোয়ারে ভাসছে দেশ । নির্বাচনের সময়ে সুবিধাভোগীদের খোঁজেও পাওয়া যাবে না বরং তখন আওয়ামীলীগের দুর্বলতাকে কাজে লাগাবে তারা ।
কেননা মহিউদ্দিন আহমেদ পেশী শক্তির রাজণীতিতে বিশ্বাসী নয় । কোন প্রকার পেশী শক্তি ছাড়াই ক্ষুদ্রতম ছাত্র নেতা থেকে আজকের অব¯’ানে এসেছে মাটি ও মানুষের নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ ।
এ দিকে মহিউদ্দিন আহমেদ পরপর ২বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান । তিনি সিরাজদিখানের মালখানগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন । তাহার স্ত্রীও ¯’ানীয় ইউপির পরপর ২বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান । তিনি দল থেকে মনোনয়ন পেতে নিজের মাঠ গোছা”েছন বলে জানা গেছে। মুন্সীগঞ্জ ১ আসনের জনতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি।
সিরাজদিখান মাটি ও মানুষের নিকট তুমুল জনপ্রিয় ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিত্ব মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি একজন সেরা সংগঠকও । তৃনমূলের নেতাকর্মী ও সাধারন আম জনতা খুব সহজেই তাদের প্রিয় মহিউদ্দিন ভাইয়ের নিকট পৌঁছাতে পারেন ।
মহিউদ্দিন আহমেদ জানালেন, সিরাজদিখানে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব শক্ত হাতে ধরে রেখেছেন। দুই টার্ম জনগণ তাকে ভোট দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে। ১৯৭০ সালে ক্যাপ্টেন (অব:)জামালউদ্দিন আহমেদের পর সিরাজদিখান থেকে আর কেউ এমপি নির্বাচিত হয়নি। তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করে আসছেন। সিরাজদিখানের সন্তান হিসেবে এবার তিনি সিরাজদিখান থেকে দলীয় নমিনেশন চা”েছন। নৌকা পেলে তিনি বিপুল ভোটে জয়ের আশা করছেন। তিনি যদি নমিনেশনও নাও পায় নেত্রী যাকে নমিনেশন দিবেন তিনি নৌকার পক্ষেই কাজ করবেন ।
এদকে ঘনঘন এলাকায় আসছেন, মাঠে ঘাটে ঘুরছেন আওয়ামীলীগের ক্লিন ইমেজের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াসউদ্দিন আহমেদ । তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশে সফরসঙ্গীও হয়েছেন । দলীয় প্রধান কার্যালয়ে তার তার ব্যাপক যোগাযোগ রয়েছে । তিনি ২ জন দলীয় শীর্ষ নেতার আশির্বাদপুষ্ট ।
তিনি দাবী করে বলেন, আমাকে নেত্রী নমিনেশন দিলে আমি ইনশালাহ নেত্রীকে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনটি উপহার দিব । আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমি এমপি হলে বাংলাদেশের অধিক উন্নয়নের আসনের এটি হবে একটি ।
তিনি আরও বলেন, ওয়ান এলিভেনে মাঠে ছিলাম এবং আওয়ামীলীগের সবচেয়ে ট্র্যাজেডি ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায়ও স্পটে ছিলাম । আলাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন তাই বেঁচে আছি । যতদিন বাঁচব ততদিন বঙ্গবন্ধুর দল করব । নৌকা আমার জীবন,নৌকা আমার প্রান । জাতির জনকের কন্যা আমাদের অভিভাবক । আমার বিশ্বাস তিনি মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের নমিনেশন প্রদানে সঠিক সিদ্ধান্তই নিবেন ।
অধ্যাপক ডাঃ বদিউজ্জামান ভূইয়া (ডাবলু) । তিনি পেশায়একজন দেশ বরেণ্য চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, স্বা¯’্য বিষয়ক লেখক ও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ কেন্দ্রীয়কমিটির স্বা¯’্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন । তিনি শ্রীনগরে " বিক্রমপুর ভূইয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল " নামের একটি প্রতিষ্ঠান করেন। তার পিতা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তার মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও জনসাধারনের সাথে কম যোগাযোগ রয়েছে ।
দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তাকে দলীয় নমিনেশন দেবেন- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে এই চিকিৎসক বলেন, নৌকার জয় মানে তার জয় নয়- এ দেশের প্রত্যেকটি মানুষের জয়। এ দেশের জয়, এ মাটির জয় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার এই বার্তা নিয়ে তিনি মুন্সীগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকায় কাজ করছেন বলে জানান।
মুন্সীগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার সিরাজদিখান ও শ্রীনগরে রয়েছে আওয়ামী লীগে বিভক্তি। এ নিয়ে হয়েছে সংঘর্ষ, একাধিক মামলা।বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রুপের সঙ্গে অপর গ্রুপের শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মো. মমিন আলী গ্রুপের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় এমন একজন নেতাকে জনগন চায় যে নেতার জনপ্রিয়তা থাকবে, জনগণ ভালবাসবে, সৎ ও নিষ্ঠাবান হবে, রাজনৈতিক মামলা মোকদ্দমায় কম জড়াবে অর্থাৎ বিরোধীদলকে হয়রানি করবেনা, উন্নয়নের র“পকার হবে. সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে প্রাধান্য দিবেনা । সে দিনটির অপেক্ষায় বসে রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের আপামোর জনতা, যে দিনটিতে একজন সৎ ও যোগ্য নেতা দলীয় মনোনয়ন পাবেন । জনগণ আশাবাদী বঙ্গবন্ধু কন্যা কোন মামলাবাজ সন্ত্রাসীকে ও স্থানীয় বাসিন্দা ব্যতীত কোন বহিরাগত লোকদের নমিনেশন এ আসন থেকে মনোনয়ন দিবেননা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: