নিউজ ডেস্ক | অধিকারপত্র
সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ জুপিটার তার বিশালতা ও রহস্য নিয়ে নতুন করে আমাদের বিস্মিত করে তুলছে। গ্রহটির গভীরতা ও অস্থির বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে এতদিন যে ধারণা প্রচলিত ছিল তাতে বড়সড় পরিবর্তন এনেছে নাসার জুনো (Juno) মহাকাশযান। জুনোর সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে জানা গেছে জুপিটারের সুবিশাল ঝড় গ্রেট রেড স্পট (Great Red Spot) যা প্রায় ২০০ বছর ধরে স্থিতিশীল ছিল বলে মনে করা হতো তা আসলে অপ্রত্যাশিতভাবে অস্থির। এর আচরণে হঠাৎ এমন পরিবর্তন দেখা গেছে যা গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের নতুন এবং গভীর রহস্য উন্মোচন করেছে। জুপিটারের ঘূর্ণায়মান ঝড়, বর্ণিল মেঘের স্ট্রাইপ এবং বিচিত্র চাঁদপুঞ্জ বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিন ধরে মুগ্ধ করে আসছে। জুনো মহাকাশযান গ্রহটির অত্যন্ত কাছ থেকে যে ছবি ও তথ্য পাঠিয়েছে। তা বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে গ্রহটির ঘনত্বযুক্ত মেঘের স্তরের অনেক গভীরেও অত্যন্ত জটিল বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়া সক্রিয়। এই প্রক্রিয়াগুলি আগের ধারণার তুলনায় অনেক বেশি পরিবর্তনশীল ও গতিময়। গ্রহটির মেঘের নিচে শত শত কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত ঝড়ের গতিপ্রকৃতি এবং ঘনত্বযুক্ত অ্যামোনিয়ার স্তরগুলির পারস্পরিক ক্রিয়া সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে জুনো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই যুগান্তকারী নতুন তথ্যগুলো আমাদের সৌরজগতের এই বৃহত্তম গ্যাস জায়ান্ট এর আবহাওয়া ও জলবায়ু চক্র সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা দেবে। জুনোর পর্যবেক্ষণ শুধু জুপিটারের বায়ুমণ্ডলের কাঠামোই নয় বরং এর অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা এবং শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করছে। জুপিটারকে সৌরজগতের প্রাচীনতম এবং মৌলিক গ্রহ হিসেবে গণ্য করা হয়। তাই এর পর্যবেক্ষণগুলো দূরবর্তী এক্সোপ্ল্যানেটগুলির গঠন ও আবহাওয়া বোঝার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জুনো’র এই চলমান অভিযান জুপিটার এবং তার সুবিশাল চাঁদপুঞ্জ (যেমন গ্যানিমিড, ইউরোপা) রহস্য উন্মোচনের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। জুপিটারের ঘন মেঘের আড়ালে কী ধরনের চাঞ্চল্যকর পরিবর্তন হচ্ছে এবং গ্রেট রেড স্পটের ভবিষ্যৎ কী, তা বিস্তারিতভাবে জানতে নাসার সম্প্রচারিত ছবি ও ভিডিও গ্যালারি বিশ্বজুড়ে কৌতূহলী দর্শকদের জন্য এক চমকপ্রদ ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে।
--মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: