বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকারপত্র ডটকম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো নির্বাচনী জোট বা আসন সমঝোতায় গেলে এনসিপিকে কঠিন রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে। রোববার (আজ) সকালে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এই অবস্থান তুলে ধরেন।
সামান্তা শারমিন বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক মিত্র নয়। তাদের রাজনৈতিক দর্শন ও অবস্থানের সঙ্গে কোনো সহযোগিতা বা সমঝোতা এনসিপির জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।” তিনি মনে করেন, এমন সিদ্ধান্ত দলের আদর্শিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
জামায়াতের সঙ্গে সম্ভাব্য আসন সমঝোতা নিয়ে এনসিপির ভেতরে ইতোমধ্যে তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। এর জেরে পদত্যাগ করেছেন দলের তিন নেতা—তাসনিম জারা, তাজনূভা জাবীন ও মীর আরশাদুল হক। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এনসিপির ঘোষিত ১২৫ আসনের প্রার্থী তালিকায় এই তিনজনের নামই ছিল। পাশাপাশি দলের প্রায় ৩০ জন নেতা দলীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে সম্ভাব্য জোট নিয়ে নীতিগত আপত্তি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী সামান্তা শারমিন তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, এনসিপির মূলনীতি ও রাষ্ট্রকল্প জামায়াতের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচন তথা ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’—এই তিনটি ইস্যুতে অভিন্ন অবস্থানই যে কোনো রাজনৈতিক মিত্রতার পূর্বশর্ত বলে তিনি মনে করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াত নিম্নকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবিতে সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে। এ প্রেক্ষাপটে এনসিপির আহ্বায়ক আগেই বলেছিলেন, “যারা সংস্কারের পক্ষে নয়, তাদের সঙ্গে জোট সম্ভব নয়।”
এই অবস্থান থেকেই জুলাই পদযাত্রার পর এনসিপি ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেয় এবং সারা দেশ থেকে প্রার্থী আহ্বান করে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জামায়াত ইস্যু এনসিপির ভেতরে আদর্শিক দ্বন্দ্বকে আরও প্রকট করেছে, যা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: