🖊️ ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
(সূত্র: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দফতর)
গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে ধৈর্য ও সহনশীলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। তিনি বলেন, গণতন্ত্র কোনো চূড়ান্ত গন্তব্য নয়; বরং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, যেখানে অনিশ্চয়তা থাকবেই। এসব অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রকে টেকসই করতে ধৈর্য ও সহনশীলতার বিকল্প নেই।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ‘Empowering Transition, Building Democracy’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত গণতন্ত্র বিষয়ক আন্তর্জাতিক আন্তঃবিষয়ক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার নিয়ে আলোচনা
পলিটিক্যাল অ্যান্ড পলিসি সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন (PPSRF)–এর আয়োজনে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন চলবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সম্মেলনে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং সহনশীল সমাজ গঠনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় ‘রূপান্তর’ বলতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অনিশ্চয়তার সঙ্গে মোকাবিলা করাকে বোঝায়, যার কোনো সহজ বা তাৎক্ষণিক সমাধান নেই। নির্বাচন, সংস্কারের স্থায়িত্ব, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে হলে বহুমাত্রিক ও আন্তঃবিষয়ক আলোচনার প্রয়োজন।
বুদ্ধিবৃত্তিক নেটওয়ার্ক তৈরির আশা
অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ একটি সহনশীল ও আশাবাদী জাতি হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। এ ধরনের সম্মেলন দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি বুদ্ধিবৃত্তিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে।
উপস্থিত অতিথিরা
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা
- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান
স্বাগত বক্তব্য দেন PPSRF–এর সভাপতি ও সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ভিডিও বার্তায় বক্তব্য প্রদান করেন।
সম্মেলনের পরিধি
আয়োজকরা জানান, সম্মেলনের জন্য জমা পড়া প্রায় ১৬৫টি গবেষণাপত্র থেকে বাছাই করে ৬৭টি প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এতে অনলাইনে প্রায় ২০টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন এবং বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশ সম্মেলনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।
এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে রয়েছে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি (IPSA)–এর গবেষণা কমিটি RC 48 ও RC 13, বাংলাদেশ সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ (BSSRC), বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি (BPSA), শ্যাডো রিফর্মস কমিশন (SRC), শ্যাডো ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন (SNCC) এবং দ্য ইয়াং লার্নার্স স্টাডি সেন্টার (YLSC)।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: