
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
পদ্মার চরের প্রায় দেড়শ বিঘা জমির সোনালী ধানসহ বিভিন্ন ফসলের উপর নজর পরেছে একটি ভূমিদস্যু চক্রের। চক্রটি ফসল কেটে নেওয়ার সময় ভূমিহীন কৃষকদের কাছে বিঘা প্রতি (২,৫০০)আড়াই হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না পেয়ে চক্রটি ভূমিহীন সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ আদালতে মিথ্যা গুম মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় পুলিশ ভূমিহীন সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় টেক্সাস কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম টিপু ও আরেক আসামী হারুন সারেংকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার শ্রীনগর থানায় আয়োজিত ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন সহ কয়েকজন বক্তব্য রাখলে তোলপাড় শুরু হয়। পরে শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মাকসুদা লিমা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। ওই দিনই মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার এসআই ফিরোজ মোল্লাকে জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার দিঘীরপাড় ক্যাম্পে বদলি করা হয়। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার ভাগ্যকূল এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পদ্মার চর সহ আশ-পাশের এলাকায় বিজার করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক। তদন্ত ছাড়া মিথ্যা গুম মামলা হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ভূমি দস্যুদের বিচার বাদীতে ঢাকা-দোহার সড়ক অবরোধ সহ মানববন্ধনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় ভূমিহীনরা সমিতি গঠন করে উপজেলার সবচেয়ে বড় এই চরে বোর ধান,পাট, কুমড়া, বেগুন, পটল, কাঁচা মরিচ, বাদাম সহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করেছেন। ফসল লাগানোর সময় কেউ বাধা না দিলেও উত্তোলনের সময় বাধে বিপত্তি। ভূমি দস্যুদের কাছে অসহায় হয়ে পরে চাষীরা। গত ৯ এপ্রিল ভূমি দস্যুদের পক্ষে ভাগ্যকূল গ্রামের জাহাঙ্গীর মোড়ল তার ভাতিজা শরিয়তপুরের জাজিরা থানার কাজী কান্দি গ্রামের শহিদুল ইসলাম (১৬) কে গুম করা হয়েছে মর্মে মুন্সীগঞ্জ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ভূমিহীন সমিতির ১৭ জনের বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের করে। আদালতের নির্দেশে শ্রীনগর থানা পুলিশ বিষয়টি মামলা হিসাবে রেকর্ড করে ২ জনকে গ্রেপ্তার করে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গুম হওয়া ভিকটিমের ঠিকানায় এই নামে কেউ নেই। শ্রীনগর থানার ওসি তদন্ত ফরিদ উদ্দিন জানান, জাজিরা থানা পুলিশ মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে লিখিত ভাবে আমরা এখনো অনুসন্ধান রিপোর্ট পাইনি। মামলার ৩ নম্বর সাক্ষী আ ঃ খালেক স্বীকার করেন আসামীরা টাকা না দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। জাজিরার ওই ঠিকানায় মামলার ভিকটিম শহিদুল নামের কেউ নেই বলেও তিনি আরো জানান এই বিষয়ে আমি সহ আরো লোক আছে সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লিয়াকত খান,মালেক উকিল,নূরু ভূইয়া,মতিউর রহমান সারেং,আঃহাকিম মাষ্টার,জাহাঙ্গীর,জুলহাস ফকিরসহ প্রায় একশ জন ছিলাম তবে চেয়ারম্যান ও মালেক উকিল আমাগো সব। ৪ নম্বর সাক্ষী মো ঃ আলী ফরাজী বলেন আমাকে না জানিয়ে এই মিথ্যা মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে। ভাগ্যকূল বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এলাকার প্রভাবশালী ২ ভূমি দস্যুর ছত্রছায়ায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের চিহ্নিত রাজাকার। মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ও ভাগ্যকূল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন মিটুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ষ্টাটাসে মামলাটি মিথ্যা আখ্যা দিয়ে এর দায়েরকারী সহ চরের ভূমিদস্যুদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেণ। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ পারভেজ বলেন অচিরে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিসহ মামলাটি প্রত্যাহারের দাবী জানান। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আলমগীর হোসেন বলেন, মামলাটির সত্যতা পাওয়া যাচ্ছেনা। আমরা এব্যাপারে দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: