ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর ॥

পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরুর দিন থেকেই রেল চলবে : রেলমন্ত্রী

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৬ মে ২০১৮ ১৯:১৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৬ মে ২০১৮ ১৯:১৬

 “গত ২৭ এপ্রিল বেইজিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক ও এক্সিম ব্যাংক অব চায়নার ভাইস প্রেসিডেন্ট সুন পিং এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। এর মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচিত হলো।”

 বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সরকারের এক্সিম ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে ২ হাজার ৬৬৭ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (সমতুল্য ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা) ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। আজ রোববার দুপুরে রেলভবনের সম্মেলন কক্ষে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরসহ প্রকল্পের সার্বিক অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এ কথা জানিয়েছেন।
  সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (প্রকল্প পরিচালক) গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক, প্রকল্পের সুপারভিশন পরামর্শক মেজর জেনারেল সাঈদ মাসুদ প্রমুখ।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় দেশে রেলপথ ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিগত দুই মেয়াদে রেলের উন্নয়নে যুগান্তকারী প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে রেল এখন জনবান্ধব এবং যাত্রী পরিবহন বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন রেল আর অবহেলিত নয়। ট্রেনের গতি বিএনপির আমলে ছিল কম। শেখ হাসিনার সরকার রেলকে গুরুত্ব দিয়ে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করেছে। এখন রেল নির্দিষ্ট যাওয়া- আসা করে। তিনি বলেন, আমরা রেলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা ঢাকা- চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন নির্মাণের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছি।
মো. মুজিবুল হক বলেন, খুব শিগগির এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট সামারি পাঠাবো। প্রধানমন্ত্রী যেদিন সময় দিবেন সেদিন এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জনগণের কাছে এখন আর স্বপ্ন নয়, এটা এখন বাস্তব। পদ্মাসেতু দিয়ে যেদিন প্রথম যানবাহন চলাচল করবে সেইদিনই সেতুর উপর দিয়ে রেল চলাচল করবে সেই লক্ষ্য নিয়ে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগের ফলে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। রেলপথ চালু হলে এসব জেলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব মানুষের উন্নয়ন হবে। খুব দ্রুত রেলপথের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকা হতে যশোরের দুরত্ব ৩৫৬ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ দুরত্ব দাঁড়াবে মাত্র ১৭০ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার। অর্থাৎ ১৮৫ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দুরত্ব কমে যাবে। বর্তমানে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব ৪১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব দাঁড়াবে ১৯৯ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। অর্থাৎ এ পথের দুরত্ব কমবে ২১৩ দশমিক ২৭ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে খুলনা যেতে সময় লাগে ৯ ঘন্টা, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘন্টা।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড’ এর সঙ্গে ২৭ হাজার ৬৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কমার্শিয়াল চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পের আওতায় মোট ২১৫ দশমিক ২২ কি.মি রেললাইন নির্মাণ করা হবে, যার মধ্যে প্রায় ২৩ কি.মি উড়াল (এলিভেটেড) রেলপথ। এমনকি কেরানীগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটিও উড়াল রেলপথে নির্মিত হবে। এ সেকশনে ১৪টি নতুন রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করা হবে এবং বিদ্যমান ৬টি স্টেশন নবায়ন করা হবে। এছাড়া, এ সেকশনে নতুন ট্রেন পরিচালনার জন্য ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: