ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

মেহেরপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৮ জুন ২০১৮ ১৮:০৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৮ জুন ২০১৮ ১৮:০৬

 

 এবার জেলায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাঁঠাল বাগান ও জেলার সরকারি রাস্তার দু‘পাশে সরকারি বেসরকারীভাবে লাগানো কাঁঠাল গাছগুলোতে কাঁঠালে ভরে গেছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাংনী হাটবোয়ালিয়া সড়কের দু’পাশে কাঁঠালের সারিবদ্ধ গাছ পথচারিদের মুগ্ধ করে। প্রায় ১০ কি.মি রাস্তা জুড়ে এই কাঁঠালের গাছে কাঁঠাল ঝুলে আছে। দেখভালের নেই কোন লোকজন। কেউ একটি কাঁঠালও চুরি করে না। পথচারীরা চলার পথে একটু দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে দেখছে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো এসব গাছের কাঁঠাল। আঠালো এই ফলটি সাইজে খুব একটা বড়ো না হলেও স্বাদে অনন্য।
চলতি মৌসুমে জেলায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন কাঁঠালের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ বলছে, অনুকূল আবহাওয়ায় গাছে ব্যাপক কাঁঠাল ধরেছে। তবে মৌসুমের শুরু থেকে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের কারণে এবার কাঁঠাল ভালো হয়েছে। বাজারে পাকা কাঁঠালও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সবজি হিসেবে বাজারে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে। কাঁঠাল উৎপাদনে কোনো খরচ না থাকায় চাষীরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর কাঁঠাল রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে বলে আশা করছেন চাষীরা।
গাংনীর রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম সাকলাইন জানান, তার ইউনিয়নের গাংনী-হাটবোয়ালিয়া সড়কসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় লাগানো বিভিন্ন গাছের মধ্যে অন্তত ১০ হাজার কাঁঠাল গাছ রয়েছে। এসব গাছের ফল রাস্তার পার্শ্ববর্তী মানুষ ভোগ করে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৩টি উপজেলার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়েছে। তবে সরকারি রাস্তার দু‘পাশে সরকারিভাবে বনায়ন ও বেসরকারীভাবে লাগানো কাঁঠাল গাছ এই পরিসংখ্যানের বাইরে। জেলার ১৮টি ইউনিয়নের সর্বত্রই অনেক কাঁঠাল গাছ রয়েছে, যার আনুপাতিক সংখ্যা অন্তত ২ লক্ষাধিক এবং একটি কাঁঠাল গাছে গড়ে ২০ থেকে ৭০টি পর্যন্ত কাঁঠাল ধরেছে। প্রতিটি কাঁঠালের আকার ও চেহারাভেদে ২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আষাঢ়ের শেষে ও মাসের প্রথম দিকে কাঁঠাল পাকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে এবার জ্যৈষ্ঠ মাসেও পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁঠাল বাজারে বেচা কেনা হচ্ছে।
প্রতিটি মানুষের সুস্থ-সবল স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিনের অভাব পূরণেসুস্বাদু কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা
কৃষকরা জানান, কাঁঠালের একটি বড় গুণ হলো এর কিছুই ফেলে দেওয়া লাগে না। কাঁঠালের বিঁচি বা আটি এবং কাঁচা কাঁঠালের মোচা দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়া যায়। কাঁঠালের খোলস ও পাতা গরু-ছাগলের প্রিয় খাবার। এ ছাড়া কাঁঠালের কাঠ থেকে আসবাবপত্র তৈরি করা ভালো হয়।
পাকা কাঁঠালে ১ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম প্রোটিন, দশমিক ৩০ মিলিগ্রাম ফ্যাট, ২৬ দশমিক ১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম লৌহ, দশমিক ১১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ রয়েছে। তাছাড়া কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ,বি,ও ই রয়েছে। এছাড়া পাকা কাঁঠালের বিচি দিয়ে সুস্বাদু তরকারি রান্না করা হয়।
জেলা কৃষি সস্ম্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আখতারুজ্জামান জানান, জেলায় এবছর কাঁঠালের ফলন ভাল হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কের পাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শত শত গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে বাড়ির আঙিনায় কাঁঠাল চাষ করা হচ্ছে। কাঁঠাল চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সারা বছর যাতে কাঁঠালের চাষ করা যায় তার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: