ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল।

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০১৮ ১১:৪৪

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০১৮ ১১:৪৪

১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রের একটা বড় অংশ দখল করে নেয়। পরে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলের সীমানা নির্ধারণ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে এই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। ফিলিস্তিনিরা চায় পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করা হোক। ‌আর ইসরায়েলের দাবি,জেরুজালেম অবিভাজ্য। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরেই স্বতন্ত্র দুইটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নীতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই নীতি থেকে সরে এসে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

দফায় দফায় হামলা ও পাল্টা হামলার পর অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) দুই পক্ষের মধ্যে এ সমঝোতা হয়। দুই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই খবরটি জানিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে যায়
২০১৪ সালের পর এ বছর গাজায় ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা দেখা দেয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। গত ৩০ মার্চ থেকে গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের ছয় সপ্তাহের মাচ অব রিটার্ন আন্দোলন চলার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি,নিহতদের বেশিরভাগই হামাস সদস্য এবং জঙ্গি। বিক্ষোভের আড়ালে তারা হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল উত্তেজনার পর গত ৩০ মে ইসরায়েল ও গাজার ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি ডি ফ্যাক্টো অস্ত্রবিরতি চুক্তি হলেও পরে তা ভেস্তে যায়। দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলতে থাকে। এ অবস্থায় আবারও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্ত্রবিরতির খবর পাওয়া গেছে। মিসরের মধস্থতায় অস্ত্রবিরতির আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, আন্তর্জাতিক মান সময় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে নয়টা থেকে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে।

বুধ ও বৃহস্পতিবার গাজায় ১৫০টির বেশি স্থাপনায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর এ অস্ত্রবিরতির কথা জানা গেলো। বুধবার (৮ আগস্ট) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এদিন মধ্যাঞ্চলীয় গাজার জাফারায়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইনাস খামাশ ও তার ১৮ মাস বয়সী মেয়ে নিহত হয়েছে। ২৩ বছর বয়সী ইনাস অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হামলায় তার স্বামীও আহত হয়েছেন। বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের এক সদস্য নিহত হয়। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এক টুইটার পোস্টে দাবি করেছে,তারা গাজায় একটি অস্ত্র তৈরির কারখানা ও গুদামসহ ১৪০টি কৌশলগত জায়গায় হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি,বুধবার গাজায় তাদের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে জঙ্গিরা গুলি ছোড়ার পরই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। জবাবে ইসরায়েল ট্যাংক থেকে গোলা ছুড়েছে। এরপর আবার প্রতিশোধ নিতে বুধবার (৮ আগস্ট) রাতে ইসরায়েলি স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানো হয়।

হামাসের সামরিক শাখার পক্ষ থেকে রকেট হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে। এর আগে সপ্তাহের শুরুর দিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের শেল হামলায় দুই হামাস সদস্য নিহত হয়।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: