odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Sunday, 16th November 2025, ১৬th November ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই জানেন,কোন প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে

মনোনয়ন নিয়ে যেসব খবর হচ্ছে সেগুলো ভিত্তিহীন, ভুয়া ও বানোয়াট কোনো বাস্তবতা নেই

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৬ September ২০১৮ ০৫:০৭

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৬ September ২০১৮ ০৫:০৭

আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগে পুরোদমে জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে— এমনটি নিশ্চিত করে দলের একাধিক নেতা বলেন, বিএনপি তাদের দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হওয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে টালবাহানা করলেও ভেতরে ভেতরে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে কারণে নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে আওয়ামী লীগ।

দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে তিন দফায় তৃণমূলের নেতাদের গণভবনে ডেকে জাতীয় নির্বাচনের বার্তা দিয়েছেন— এমনটা জানিয়ে নেতারা বলেন, নির্বাচনি মিশন-ভিশনের পরোক্ষ-প্রত্যক্ষ নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় প্রধান।

টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করা চ্যালেঞ্জিং হবে— এমনটাই মনে করছে দলের হাই কমান্ড। এ কারণে ধাপে ধাপে লক্ষ্য-কৌশল নির্ধারণ করে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে আগামী নির্বাচনে ‘জয়যোগ্য’ প্রার্থীকেই নৌকা উপহার দেওয়া হবে।

কোনো বিশেষ মহল বা গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হলে শেখ হাসিনা কাউকে মনোনয়ন দেবেন না— এমন মত দিয়ে নেতারা জানান, বিশেষ কয়েকটি ক্রাইটেরিয়া পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। তবে এর আগের মেয়াদগুলোতে তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া শুরু হলেও এবার তফসিল ঘোষণার আগেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তারা
কারো নাম চূড়ান্ত হয়েছে কি— এমন প্রশ্নের জবাবে দলের সিনিয়র এই নেতা বলেন, হলেও সেটা একমাত্র আমাদের মাননীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই জানেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘কোনো প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়নি। এটা আমরা জানি না। আমাদের পার্টি থেকেও এ বিষয়ে কিছু বলেনি। আমরা আশা করছি, আগামী অক্টোবর নাগাদ নাগাদ প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।’

নির্বাচনি জোটের রূপরেখা নির্ধারণের লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে জোটের রূপরেখা একরকম হবে, না এলে হবে অন্যরকম। তবে যা কিছু হবে, তা একমাত্র নৌকার জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যেই হবে, বলেন নেতারা।

সংবাদমাধ্যমে মনোনয়নের যেসব তালিকা আসছে, সেগুলো ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে একাধিক নেতা বলেছেন, এগুলো মনগড়া, ভুয়া তালিকা। এর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই।

আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পর্যন্ত প্রার্থীর স্বচ্ছতা, জনপ্রিয়তা ও যাচাই-বাছাই অব্যাহত থাকবে; এরপরেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে— এমনটা বলেছেন ওই শীর্ষ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নেতারা।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ও দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য না প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রথম সারির শীর্ষ পর্যায়ের কিছু নেতার মনোনয়ন এমনিতেই চূড়ান্ত থাকে। কেবল সেগুলোর কথাই বলা যায়। এর বাইরে কারোটাই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না
জরিপ ও প্রাপ্ত জরিপের তথ্য পর্যালোচনা অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত নির্বাচনি কৌশল হিসেবে প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

মনোনয়নের খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিরই কোনো ভিত্তি নেই বলেও জানান সরকার দলীয় এই নেতা।

আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন।
আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে সব ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ, জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর মনোনয়নই চূড়ান্ত হয়নি। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে— এমন বিবেচনা থেকেই আওয়ামী লীগসহ শরিক জোটের প্রার্থীদের মনোনয়নের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

এবারের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে ভেবেই এগুচ্ছে আওয়ামী লীগ। সূত্র জানিয়েছে, সে কারণেই প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রণয়ণে সব ধরনের বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করছেন স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জরিপ ও প্রাপ্ত জরিপের তথ্য পর্যালোচনা অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত নির্বাচনি কৌশল হিসেবে প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

মনোনয়নের খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে, তার কোনোটিরই কোনো ভিত্তি নেই বলেও জানান সরকার দলীয় এই নেতা।

আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন।
সূত্র জানায়, এখনও মাঠ জরিপ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি প্রাপ্ত জরিপ পর্যবেক্ষণ করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নীতি-নির্ধারকরা। অংশহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। শীর্ষ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারক যে কয়েকজন নেতার মনোনয়ন প্রশ্নাতীত, তাদের ক’জন ছাড়া বাকি কারো বিষয়েই কেউ কোনো তথ্য এখনও জানেন না। এমনকি মন্ত্রিত্বে রয়েছেন— এমন অনেকেই এখনও জানেন না তাদের মনোনয়ন নিয়ে সবশেষ সিদ্ধান্ত কী।
আগামী অকটবরের মধ্যেই ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করার ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়নে সংযোজন-বিয়োজন হবে বলেও জানান এই নেতারা। তারা বলছেন, এবার তিন ধাপে দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ার কাজটি করা হচ্ছে।

এদিকে, সূত্র জানিয়েছে, তিন দফায় সারাদেশের তৃণমূলের নেতাদের গণভবনে ডেকে বিশেষ বর্ধিত সভায় জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সারাদেশে একাধিক জরিপ চালানো হয়েছে। সেপ্টেম্বরে আরেকটি জরিপ কার্যক্রমের ফল দলীয় সভাপতির কাছে জমা হবে।

তার আগে মনোনয়নের বিষয়ে অনুমান পর্যন্ত করা যাচ্ছে না, বলেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।

দলীয় সূত্র আরও জানায়, গত ৫ জুলাই সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের নবম তলায় সরকারি দলের সম্মেলন কক্ষে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় এমপিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করুন, যেখানে যতটুকু দূরত্ব আছে তা দ্রুতই ঘুচিয়ে ফেলুন।
ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেক এমপি-মন্ত্রীর জরিপ রিপোর্ট আমার কাছে আছে। জরিপ ও তৃণমূলের মূল্যায়নের মাধ্যমে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আগামী নির্বাচনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ— যেভাবেই হোক বিএনপি নির্বাচনে আসবে। তাই আগামী নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন হবে। সেভাবেই নির্বাচনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, এমন কোনো প্রার্থী তালিকা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। আশা করছি, আগামী অক্টোবর মধ্যে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মনোনয়ন নিয়ে যেসব খবর হচ্ছে সেগুলো ভিত্তিহীন, ভুয়া ও বানোয়াট। কোনো বাস্তবতা নেই। অনুমানের ভিত্তিতে করা হয়েছে।’

তবে এবার একটু আগেভাগেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে— এমনটি জানিয়ে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আগে যেমন তফসিল ঘোষণার পর পরই মনোনয়নের কাজ হতো, এবার তেমন হবে না। চূড়ান্ত তালিকা পরে হলেও এখন থেকেই চলছে যাচাই-বাছাই, বিচার-বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা- পর্যবেক্ষণের কাজ।’
কারো নাম চূড়ান্ত হয়েছে কি— এমন প্রশ্নের জবাবে দলের সিনিয়র এই নেতা বলেন, হলেও সেটা একমাত্র আমাদের মাননীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই জানেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য বলেন, ‘কোনো প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়নি। এটা আমরা জানি না। আমাদের পার্টি থেকেও এ বিষয়ে কিছু বলেনি। আমরা আশা করছি, আগামী অক্টোবর নাগাদ নাগাদ প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: