ঢাকা | শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সকালের শিলাবৃষ্টি এবং বিকেলের মেঘলা আকাশ মুখরিত ছিল বইপ্রেমীদের মেলাপ্রাঙ্গণ।

gazi anwar | প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:৩৬

gazi anwar
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:৩৬

 ১৭তম দিনে সকালের শিলাবৃষ্টি এবং বিকেলের মেঘলা আকাশ আগত বইপ্রেমীদের আনন্দে ছন্দপতন ঘটাতে পারেনি। নানা বয়সী মানুষের সমাগমে আজো মুখরিত ছিল মেলাপ্রাঙ্গণ। প্রতিদিনের মতো আজও গ্রন্থমেলায় নতুন বই এসেছে। নানা আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর মোড়ক উন্মোচনসহ নানা আয়োজনে মুখরিত ছিল মেলা। আজ নতুন বই এসেছে মোট ৭১টি। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন লেখকের বই এসেছে ২ হাজার ৫৪৮ টি। বিকেল ৪ টায় একুশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক : শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। কবি মনজুরে মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন মফিদুল হক, আসাদ মান্নান, শিহাব সরকার এবং আনিসুল হক। এসময় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খালেদ হোসাইন। বক্তারা বলেন, সৈয়দ শামসুল হক সাহিত্যে যেমন শিল্পকৌশলের নতুন নতুন রূপরীতি উদ্ভাবন করেছেন তেমনি গণমানুষের স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সংকল্পকে সাহিত্যভাষা দান করেছেন। লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বদরুল হায়দার, ফরিদুর রহমান, মারুফ রসুল, স্নিগ্ধা বাউল এবং অঞ্জন আচার্য। কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি মোহাম্মদ সাদিক, খালেদ হোসাইন। আবৃত্তি করেন আবৃত্তি শিল্পী লায়লা আফরোজ ও মো. মাসুদুজ্জামান। সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং অনন্যা ওয়াফী রহমানের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যমঞ্চ’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। আজ বিকেল ৩ টায় বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’ বিষয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী গ্রন্থমেলার বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯-এর সদস্য-সচিব ড.জালাল আহমেদ এবং একাডেমির পরিচালকৃন্দ। বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স এর বিক্রেতা মাহবুব আলী এবং বর্ণায়ন বুক স্টলের বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বৃষ্টির পানি জমে স্টলের টিনের চালে পানি জমে গেছে। ছাট পানি এসে ভিজিয়ে দিয়েছে বই। স্টলের নিচে পাটাতন এবং সামনে ইট বিছিয়ে কেনাবেচা চলছে। অন্যদিনের চেয়ে ক্রেতা কম। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বইমেলায় গত ৯ বছর ধরে আসছে ‘স্পর্শ’ এর প্রধান উদ্যোক্তা নাজিয়া জাবিন। এবার বইমেলায় তাদের ব্রেইলে ৮টি বই বেরিয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম নীলিমা ইব্রাহিমের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই ‘আমি বীরঙ্গনা বলছি’, রামেন্দু মজুমদারের শিশুতোষ গ্রন্থ ‘আমার স্কুল’, লুৎফুর রহমান রিটনের ‘সাতরঙা ছড়া’, ইমদাদুল হক মিলনের ‘ভালোবাসার সুখ:দুখ’, নাজিয়া জাবীনের ছড়ার বই ‘তরু’। নাজিয়া বলেন, যারা চোখে দেখতে পায়না, কিন্তু তাদের বই পড়া আগ্রহ রয়েছে এমন দৃষ্টিজয়ীদের কথা ভেবেই ব্রেইল পদ্ধতিতে বই প্রকাশ করছি। তাদের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে ২০০৯ সাল থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে ৬৯ টি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই বিভিন্ন ধরনের বই ব্রেইলে প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে আগামীকাল প্রথমবারের মতো শিশু-কিশোর চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। ২০০৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১২ বছরের শিশু-কিশোরদের পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিগুলো নিয়ে একাডেমির ড.মুহাম্মদ এনামুল হক ভবনের দ্বিতীয় তলায় এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১০ দিনব্যাপী প্রতিদিন বেলা ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী চলবে। প্রত্যেক বছর একুশে উদযাপন উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ভাষা-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের শিশুদের অঙ্কিত এ প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের নিয়েই এ প্রদর্শনী। বিকেল সাড়ে ৪ টায় প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করবেন বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: