
আব্দুর রাহিম, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
বনের পাখি বনে থাক খাচার পাখি মনের সখ মিটাক এমন বাসনা থেকে ৬ষ্ট শ্রেনী থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পাখির সাথে বসবাস। পড়াশোনার পাশাপাশি মাত্র ৬শ টাকা দিয়ে শুরু। আর পিছনে তাকাতে হয়নি তাকে। বিদেশি পাখি ও মুরগি পালন থেকেই পরিচিতি পান পাখি হাসান নামে। সকলেই এক নামে ডাকে পাখি হাসান নামে। পাখি পালন প্রানী সম্পদের অংশ হওয়ায় তরুন উদ্যোক্তা ২০১৮ নির্বাচিত হন। বাজরিগার সোসাইটি অব বাংলাদেশ গ্রুপ থেকে পেয়েছে শ্রেষ্ট্র পাখি পালন পদকও। ২০০৪ সাল থেকে ভাড়া বাসায় পাখি পালন শুরু করেন তিনি। বাবা পেশায় কৃষিবিদ ও উপ পরিচালক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হওয়ায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলায় বদলি হলেও থেমে থাকেনি পাখি পালন। পড়ার টেবিলের পাশাপাশি একই ঘরে পাখি পালন করলেও ছিটকে পড়েনি পড়াশোন থেকে। মাসটার্স করেছেন এমপিএইচ নিউট্রেশন থেকে।
হাসাননুর রহমান হাসান জানান, পাখি পালনে বাবা মার সহযোগিতা পেয়েছি সবচেয়ে বেশি। বাবা কৃষিবিদ হওয়ায় তার সহযোগিতা ছিলো অনেক। বাবার চাকুরীর বয়স বারার সাথে সাথে নিজের বাসা পরিবর্তন হয় বিভিন্ন জেলায় সাথে পরিবর্তন থেমে থাকেনি পাখি পালন। বৃদ্ধি পেয়েছে বহুলাংশে, স্কুল কলেজ পেরিয়ে ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সখের বসে পাখি পালনে সফলতা আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা অবস্থায় অনুধাবন করেন পাখি পালন একদিকে যেমন সখ পুরণ করছে অপরদিকে একটি কর্মসংস্থান ব্যবস্থা ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস বটে। এরপরই শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন। সফলতা পান অল্প সময়ে। পাখি পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হলেও প্রানিসম্পদ অফিস থেকে সহযোগীতা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। যে কোন সমস্যার সমাধানে তাদের সহযোগিতা কমতি ছিলনা। ছাত্র জীবনে পাখি পালন ও লেখাপড়ার পাশাপাশি দীর্ঘ ৭-৮ বছর কাজ করেন গৃহ শিক্ষক হিসেবে। সেই সময় গৃহ শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের সফলতা আসায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধান অনুপ্রেরনা যোগায়। তাই পাখি পালনের অর্থ দিয়ে উপজেলার পৌরশহরে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন রাডার সাইন্স একাডেমি এন্ড স্কুল। বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার বয়স মাত্র ২ বছর হলেও সফলতা পান সেখানেও। দক্ষতার সাথে বিদ্যালয় পরিচালনার ২ বছরের মাথায় সকলের কাছে পরিচিতি পান রাডার হাসান নামে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পোষাক কাল। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনয় মনোযোগি করতে পড়াশোনার পাশাপাশি রয়েছে বিনোদনের সু-ব্যবস্থা। প্রতিটি ক্লাসের দেয়ালে বিভিন্ন অক্ষর ও শিক্ষনীয় বিষয় চোখে পড়ার মতো। বিদ্যালয়ে কোচিং ব্যবস্থা না রেখে ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাশের পড়া ক্লাসেই তৈরি করানো হয়। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সফর, অনুষ্ঠিত হয় বার্ষীক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ফলে ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়ছে বিদ্যালয়ের প্রতি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৩টি ক্যাটাগরিতে ৩শ জনের অধিক ছাত্র-ছাত্রী পাঠদান গ্রহন করছে।
হাসানুর রহমান হাসান ১৯৯২ সালের ৩১ শে জানুয়ারী ধুনট উপজেলার জালসুকা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। বাবা পেশায় কৃষিবীদ ও উপ পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মা গৃহীনি। তিন ভাই এক বোনের মধ্য তিনি ৩য়। ২০০৬ সালে পঞ্চগর বি পি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস এস সি, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ পাবনা থেকে এইচ এস সি, গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসি বিভাগ থেকে অনার্স ও এমপি এইচ করেন। বাংলাদেশ ন্যাশনাল কাডেট কোর এর মহাস্থান রেজিমেন্ট শ্রেষ্ঠ ক্যাডেট (২০০৭) নির্বাচিত হন এবং সোড অব অনার ক্যাডেট আন্ডার অফিসার ছিলেন (২০০৮)। এছাড়াও ডাইম কৃষি বাংলা লিঃ এর ব্যবস্থাপক ও বগুড়া ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স এর কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল কাইয়্যুম জানান, রাডার সাইন্স একাডেমি এন্ড স্কুলটি খুবই অল্প সময়ের মধ্য মানসম্মত পাঠদানের পাশাপাশি যুগপোযোগী ও দক্ষতার সাথে পরিচালিত হওয়ায় সকলের কাছে গহনযোগ্যতা পেয়েছে। সামনে আরো এগিয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: