ঢাকা | রবিবার, ১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্ঘটনা রোধে সরকার কোনোদিনই ব্যবস্থা নেয়নি

Akbar | প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০৯:১৬

Akbar
প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০৯:১৬

ঢাকা: বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার কোনোদিনই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্য এটা বাড়তে বাড়তে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ হলে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য বন্ধ- নিরাপদ সড়কের দাবিতে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, পত্র-পত্রিকায়ও লেখালেখি হচ্ছে, চারিদিকে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠাও দেখা দিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ নিয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনার দরকার আছে। সেখান থেকে যার যার দায়িত্ব রয়েছে তাদের নির্দেশ দিতে হবে। কেননা সুশাসনের অভাবে কোনো নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না।

ড. কামাল হোসেন বলেন, সুশাসনের জন্য দরকার আইনের কার্যকর পদক্ষেপ। পুলিশ যে দায়িত্ব পালন করবে সে লক্ষ্য নিয়ে আইন করা হবে। কিন্তু পুলিশকে যদি অন্যভাবে দুর্বল করে ফেলে তখন সে আইনের শাসন থেকে সরে গেলে সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

তিনি বলেন, রাস্তায় বের হলে বোঝা যায় কিভাবে বিশৃঙ্খলা ঘটে। এখন আইন মেনে চলা তো দূরের কথা, অমান্য করাটা মহামারি আকার ধারণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, দায়িত্বে অবহেলা করছে।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গণফোরাম নেতা মেজর জেনারেল (অব.) আ ম সা আমিন বলেন, জনগণ আশা করেছিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ব্যবহার করে সরকার সত্যিকার অর্থে জনবান্ধব-গণবান্ধব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হবে। কিন্তু সরকার উদ্যোগী হয়নি। ফলে সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছেই, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। এ বিষয়ে সরকার আন্তরিক নয়। তারা রাষ্ট্রের অর্থবিত্ত লুটপাটে ব্যস্ত।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গণপরিবহনে নৈরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে নানান অনিয়মের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণ রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার। পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে থাকেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তারা তাদের চাঁদাবাজির স্বার্থে গণপরিবহন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখে। তবে গণপরিবহন ব্যবস্থার এ নৈরাজ্যের দায় বিআরটিএ এড়াতে পারে না। এ প্রতিষ্ঠানটি সুশাসনের অভাব, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও লোকবল সংকটে আক্রান্ত।

নৈরাজ্য বন্ধ ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য ১৪ দফা দাবি তুলে ধরে গণফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়, গণপরিবহন আইন ন্যায্যতার ভিত্তিতে যুগোপযোগী করে তার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-শ্রমিকের মজুরি ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্টকরণ এবং যাত্রাপথে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় দোষী চালক ও মালিকের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ সব গণপরিবহন রাস্তা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে আগামী ১ এপ্রিল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণফোরাম মানববন্ধন করবে বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাঈদুর রহমান, মোশতাক আহমেদ, রফিকুল ইসলাম পথিক, রওশন ইয়াজদানী, কাজী হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: