ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’

Admin 1 | প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ২২:২৭

Admin 1
প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ২২:২৭

‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা

অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’

বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যের রূপময় বৈশাখকে এভাবেই ধরাতলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবির কিরণে হাসি ছড়িয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি, অপ্রাপ্তি, বেদনা ভুলে নব আনন্দে জাগবে গোটা জাতি। আজ পহেলা বৈশাখ। একটি নতুন দিন, একটি নতুন বছরের শুভ সূচনা। শুভ নববর্ষ। স্বাগত ১৪২৪। ১৩ চৈত্রের রুদ্র দিনের পরিসমাপ্তি শেষে আজ বাংলার ঘরে ঘরে নতুন বছরকে আহবান জানাবে সব বয়সের মানুষ।

বাঙালির জীবনের সবচেয়ে আনন্দের এবং মহিমান্বিত দিন এই পহেলা বৈশাখ। আজ নব আলোর কিরণশিখা শুধু প্রকৃতিকে নয়, রঞ্জিত করে নবরূপে সাজিয়ে যাবে প্রত্যেক বাঙালির হৃদকোণও। নব আলোর শিখায় প্রজ্বলিত হয়ে শুরু হবে আগামী দিনের পথচলা। শুভ নববর্ষ । সকলের জন্য শুভ হোক, এই কামনায়। হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজ বাঙালি হারিয়ে যাবে বাঁধভাঙা উল্লাসে। উৎসব, আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে ভরে যাবে বাংলার মাঠ-ঘাট-প্রান্তর।সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরনো সব জরা গ্লানিকে মুছে ফেলে সকলে গেয়ে উঠবে নতুন দিনের গান।

 এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।

 বৈশাখী উৎসবের মধ্যে দিয়ে যেন বাঙালি তার শিকড় খুঁজে পায়। ১৪২৩-এর আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব ভুলে নতুন করে পথচলা শুরু হবে। পিছনে তাকিয়ে বিগত বছরের গ্লানিকে দুয়ে-,মুছে নতুন ভাবে পথ চলার দিন আজ।শপথ হোক জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে নববর্ষ উদযাপনে একসঙ্গে গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। গ্রাম থেকে শহর, গলি থেকে রাজপথ, আঁকা-বাঁকা মেঠো পথ থেকে অফুরান প্রকৃতি সবখানেই দোল দেবে বৈশাখী উন্মাদনা। মুড়ি মুড়কি, মিঠাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে নাচে-গানে, ঢাকে-ঢোলে, শোভাযাত্রায় পুরো জাতি বরণ করবে নতুন বছরকে। কেউ কেউ সকালবেলা থেকেই মেতে উঠবে নগর সংস্কৃতির দান পান্তা-ইলিশ খাওয়ার উৎসবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে আমাদের জন্য নববর্ষে ইলিশ খাওয়া সম্পর্কে নতুন পরামর্শ দিয়েছেন।তিনি বলেছেন পহেলা বৈশাখে দেশবাসীকে ইলিশের বদলে খিচুড়ি,সবজি, মরিচ পোড়া ও ডিম বাজি খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন । ৪০০ বছর আগে বাঙালি সম্রাট আকবর বাংলা ক্যালেন্ডার উন্নত করেন। নতুন বছর উপলক্ষে হালখাতা পালন করেন ব্যবসায়ীরা। খোলা হবে বছরের নুতন হিসেব নিয়ে হালখাতা। চলবে মিষ্টিমুখের আসর। বছরের শেষ দিনে চৈত্র সংক্রান্তির নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতি বিদায় জানিয়েছে ১৪২৩ বঙ্গাব্দকে। আজ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। নববর্ষ উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিওসহ প্রতিটি টিভি চ্যানেল প্রচার করবে বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান মালা। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করেছে ক্রোড়পত্র ও বিশেষ নিবন্ধ। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারো বর্ষবরণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন হচ্ছে ছায়ানটের উদ্যোগে রমনা বটমূলে নতুন বছরের আবাহন অনুষ্ঠান। এবার মানবতার বাণী ধ্বনিত হবে পুরো আয়োজনে।

-    মো: এরফান রাশেদ

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: