ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উওরে আতিক, দক্ষিনে যুববন্ধু সম্রাট

জো’র করে ক্ষমতার দা’পট দেখিয়ে শেখ হাসিনা নির্বাচনে জিততে চান না জনগণকে খুশি করে জিততে হবেঃ কাদের

odhikar patra | প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০১৯ ১৮:০০

odhikar patra
প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০১৯ ১৮:০০

সামনে ডিসেম্বরে  ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে সরকারের উচ্চপর্যায়ে। গুরুত্বপূর্ণ এই সিটির নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। এ নির্বাচনে মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে জনপ্রিয় ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করতে চায় আওয়ামী লীগ। সে ক্ষেত্রে রাজধানীর বর্তমান মেয়রদের মধ্যে ঢাকা উত্তরের আতিকুল ইসলাম ছাড়া অন্যটির দলীয় মনোনয়ন হারাতে পারেন বলে মনে করেন নিতি নির্ধারকরা। দক্ষিনের সাইদ খোকনের পরিবর্তে নতুন কাউকে প্রার্থী করা হতে পারে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন, তরুণ ও সাংগঠনিক ব্যক্তি হিসেবে যুবসমাজের রোল মডেল, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি যুববন্ধু ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।

যুববন্ধু ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট নিজের সাহসিক নেতৃত্ব ও কর্মীদের মূল্যায়নে ধীরে ধীরে নিজেকে দক্ষ সংগঠক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নগরবাসীর সেবা দিতে জনপ্রতিনিধি না হয়েও সম্রাট ইতিমধ্যে নিজেকে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছেন।

এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএমএ সাবেক সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ। আওয়ামী লীগ থেকে গণফোরামে যোগ দেওয়া মোস্তফা মহসীন মন্টুও আওয়ামী লীগের আলোচনায় রয়েছেন। তবে বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন ফের মনোনয়ন পেতে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারবেন- এমন প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিতে। মেয়র প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তির জনপ্রিয়তা, সামাজিক অবস্থান, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক, স্থানীয় ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা- এসব বিষয়কে মাপকাঠি হিসেবে দেখা হবে।

আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন,ঢাকার সিটি করপোরেশনের দুটি্র মধ্যে একটিতে মেয়রপ্রার্থী পরিবর্তনের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম যেহেতু পূর্ণ মেয়াদ দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, সে কারণে তিনি আবারও দলীয় মনোনয়ন পাবেন। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন এবার দলীয় মনোনয়ন নাও পেতে পারেন।

ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কয়েক মাস পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জো’র করে ক্ষমতার দা’পট দেখিয়ে শেখ হাসিনা নির্বাচনে জিততে চান না। আমরা জনগণকে খুশি করে তাদের রায় মেনে নির্বাচিত হতে চাই। আপনারা কেউ যদি ভাবেন ক্ষমতায় আছি, জিতেই যাব, তা হলে ভুল করবেন।

আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনী আইন মেনে নির্ধারিত সময়েই তিন সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অনেকেই মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বলে আমরা শুনেছি। তবে এখনো তিন সিটিতেই আমাদের বর্তমান মেয়ররা আছেন। তাই এখন অন্য প্রার্থীদের নাম নিয়ে আলোচনা সমীচীন নয়। তফসিল ঘোষণার পর আমাদের দলের শীর্ষ নেতারা প্রার্থিতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা না থাকলেও মনোনয়ন চাইতে পারেন সাবেক মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ব্যবসায়ী আদম তমিজী হক প্রমুখ। এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নব’ঞ্চিত দুজন কেন্দ্রীয় নেতাও এই সিটিতে মেয়র নির্বাচনে আগ্রহী।

 

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একসঙ্গে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রথম সভা হয় ওই বছরের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৭ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে প্রথম সভা হয় ৬ আগস্ট। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় নির্বাচন করতে পারবে নির্বাচন কমিশন। মেয়াদপূর্তির সময় গণনা শুরু হয় নির্বাচনের পর সিটি করপোরেশনের প্রথম সভার দিন থেকে। সেই হিসাবে আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার দুই সিটিতে একদিনে এবং মার্চের শেষ সপ্তাহে চট্টগ্রাম সিটিতে নির্বাচন হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: