
চট্টগ্রাম, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
বগলের তলায় উৎকট গন্ধ নিয়ে বিএনপি নাকে গন্ধ খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে দ্য সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটির অনুষ্ঠানে যোগদানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
'সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত পুরোপুরি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত'- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের কড়া সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিজেদের বগলের তলায় উৎকট গন্ধ নিয়ে বিএনপি নাকে গন্ধ খুঁজছে। বিএনপির আমলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে। হাওয়া ভবন তৈরী করে সমস্ত ব্যবসা থেকে ১০ শতাংশ করে কমিশন নেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, হাওয়া ভবনের দুর্নীতির সাথে তারেক জিয়ার সংশ্লিষ্টতা, বিএনপির বড় বড় মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা আমরা দেখেছি। বিএনপির এই অপকর্ম দুর্নীতির কারণেই বিএনপির শাসনামলের ৫ বছরের প্রতি বছরই বাংলাদেশ লজ্জাজনকভাবে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন বলেও জানান দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, সরকার দুদককে শক্তিশালী করেছে। আজকে ঢাকা শহরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি বা অনিয়ম যেগুলো হচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার যে কঠোর অবস্থানে আছে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ। সেই কারণেই অভিযানগুলো চলছে। এজন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিত ছিল সরকারকে অভিনন্দন জানানো, সাধুবাদ জানানো। আর নিজেদের অপকর্মের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া নিজে কালো টাকা সাদা করেছে। অর্থ্যাৎ অবৈধভাবে অর্জন করা টাকা বিএনপি নেত্রী সাদা করেছেন, জরিমানা দিয়ে। কোকোর দুর্নীতি ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে। তারেক রহমানের দুর্নীতির ব্যাপারে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। দুর্নীতির দায়ে তারেক রহমানের ১০ বছর সাজা হয়েছে।
‘খালেদা জিয়া আজকে জেলখানায় আছেন কী কারণে? এতিমখানার জন্য টাকা এসেছে, সেই টাকা এতিমখানার ব্যাংক হিসাবে না রেখে তার ব্যক্তিগত হিসাবে চলে গেছে। এই কারণেই তো তার সাজা হয়েছে। বিএনপির নেতা-নেত্রী দেশকে দুর্নীতিতে আকুণ্ঠ নিমজ্জিত করেছিল, তারা তো এ নিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকার রাখে না। আমি নাম ধরে কাউকে খাটো করতে চাই না। নাম বলতে গেলে অনেকের নাম চলে আসে।’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে এ ব্যাপারে তার বোন সেলিমা ইসলাম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে গণমাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার হাতে-পায়ের যে ব্যাথা এটি তার বহু পুরনো শারীরিক সমস্যা। এই শারীরিক সমস্যা নিয়েই বেগম খালেদা জিয়া দেশের দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। দুইবার বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির মতো দলের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেছেন। সুতরাং এই সমস্যাকে সময়ে সময়ে বলে জণগণকে বিভ্রান্ত করার যে চেষ্টা, এটি আমরা সবসময় দেখেছি। গতকাল তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করে যে কথাগুলো বলেছেন সেটা বিএনপি নেতারা কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা দেয়া যায়, সেজন্য তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তিনি যাতে সর্বোচ্চ সেবা পান। সেটা দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসালয়। সেখানে দেশের প্রথিতযশা ডাক্তাররা আছেন। দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা তাকে দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে আনার আগে তিনি যখন কারাগারে ছিলেন, তার জন্য সার্বক্ষণিক একজন ফিজিওথেরাপিস্ট ছিল। এমনকি তার পছন্দের আয়াও তার সাথে আছে; পাকিস্তান আমলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। ভারতে ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই।
চট্টগ্রামে জুয়ার আসর পরিচালনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় অভিযান চলছে। চট্টগ্রামেও হয়েছে। যেখানেই অনিয়ম পাওয়া যাবে সেখানেই এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে দ্য সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটির সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
দি সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটির সভাপতি ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
-মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ
সিনিয়র তথ্য অফিসার
+৮৮ ০১৭৬৩ ৭৭০২০৭
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: