ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি আবার খতিয়ে দেখা হবে

Admin 1 | প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ২০:১৫

Admin 1
প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ২০:১৫

ইরানের সঙ্গে ওবামা সরকারের সময় স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্তসংস্থা পর্যালোচনায় ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াটা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থবিরোধী হবে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
তেহরান যে এ পর্যন্ত পরমাণু চুক্তির সব শর্ত মেনে চলছে, তা অবশ্য স্বীকার করেছে ট্রাম্প সরকার। অন্যদিকে তেহরানের ‘পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অভিলাষ এখনো মারাত্মক ঝুঁকি বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য নাকচ করে দিয়েছে ইরান।
মার্কিন কংগ্রেসের শীর্ষ রিপাবলিকান ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পল রায়ানকে মঙ্গলবার দেওয়া এক চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, ২০১৫ সালে পরমাণু স্বাক্ষরিত চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলছে ইরান। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তেহরান সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে।
এএফপি জানায়, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে ‘বহু ব্যবহারে জীর্ণ’ মন্তব্য বলে সমালোচনা করেছেন। টুইটারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জরাজীর্ণ এ অভিযোগ ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো ইরানের মেনে চলার বিষয়ে তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেদের স্বীকারোক্তিকে চাপা দিতে পারবে না।’
কথিত জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) অনুযায়ী, চুক্তির শর্তগুলো ইরান মেনে চলছে কি না, তা প্রতি ৯০ দিন অন্তর কংগ্রেসকে জানানোর কথা পররাষ্ট্র দপ্তরের। তার আওতায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কংগ্রেসকে হালনাগাদ করা এটাই প্রথম।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পল রায়ানকে এদিন লিখিতভাবে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ইরান চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত-সংশ্লিষ্ট জেসিপিওএ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নিরূপণের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নেতৃত্বে আন্তসংস্থা পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এ পর্যালোচনা কত দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে, তা জানাননি রেক্স টিলারসন। পল রায়ানকে দেওয়া চিঠিতে তিনি শুধু বলেছেন, এই ইস্যুতে কংগ্রেসের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রশাসন আগ্রহী।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিকে ‘সবচেয়ে খারাপ চুক্তি’ আখ্যা দিয়ে ক্ষমতায় এলে তা বাতিলের হুমকি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে, বিবিসি জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে ‘অস্থিতিশীলতা উসকে দেওয়ার জন্য’ ইরানকে দায়ী করেছেন রেক্স টিলারসন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে গত বুধবার প্রকাশিত বিবৃতিতে টিলারসন আরও বলেন, ‘লাগামহীন ইরান উত্তর কোরিয়ার পথেই অগ্রসর হতে পারে।’
বিবৃতিতে রেক্স টিলারসন অভিযোগ করেন, ‘ইরান বিপজ্জনকভাবে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস ও সহিংসতা চালান করছে, একসঙ্গে একাধিক দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘সন্ত্রাসের মদদ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইরান বিশ্বের শীর্ষ দেশ, বহু তীব্র লড়াইয়ের পেছনের ক্রীড়নক এবং সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাক ও লেবাননের মতো দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করছে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনা করতে সহায়তা করছে।’
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরিয়া সংঘাতে জড়িয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন দেওয়ার জন্যও ইরানের সমালোচনা করেন। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো ইরান পুরোপুরি মেনে চলছে বলে স্বীকার করলেও রেক্স টিলারসন বলেন, তেহরানের ‘পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অভিলাষ এখনো আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: