
দখলকৃত পশ্চিম তীরে একটি ইসরাইলি সেনাঘাঁটির বাইরে সেনা সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে বেসামরিক ব্যক্তিরা। তারা সামরিক যানবাহন ও নিরাপত্তা স্থাপনাতেও ভাঙচুর চালিয়েছে। সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, পশ্চিম তীরের মধ্য অঞ্চলের বিনইয়ামিন রিজিওনাল ব্রিগেডের কমান্ডারকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় এবং তাকে ‘দেশদ্রোহী’ বলেও গালি দেওয়া হয়।
সামরিক বাহিনী আরো জানায়, শুক্রবার রাতে তিনজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে বসতি স্থাপনকারীরা। এরপরই কাফর মালিক নামক ফিলিস্তিনি গ্রামের কাছে সেনানিয়ন্ত্রিত নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করতে গেলে সেনারা তাদের বাধা দেয়। সে সময় সেনাদের ওপরই হামলা চালায় বসতি স্থাপনকারীরা।
ঘটনার জেরে ছয়জন বেসামরিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় ব্রিগেড ঘাঁটির গেটে ‘ডজনখানেক’ ইসরাইলি বেসামরিক লোক জড়ো হয়। একপর্যায়ে তারা সহিংস হয়ে ওঠে। সেনা সদস্যদের ওপর হামলা চালায়, পিপার স্প্রে ব্যবহার করে এবং সামরিক যানবাহনে ভাঙচুর করে।
আইডিএফ (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী), পুলিশ ও সীমান্তরক্ষীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে জনসমাবেশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় এক ইসরাইলি নাগরিক আহত হয়।
কয়েক ঘণ্টা পর আরেকটি বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানায়, ইসরাইলি বেসামরিক লোকজন একটি নিরাপত্তা স্থাপনায় আগুন দিয়েছে এবং সেটি ভাঙচুর করেছে। এই স্থাপনাটি সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো।
ঘটনাটি নিয়ে ইসরাইলি রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, আইন মেনে চলা কোনো রাষ্ট্রই সামরিক স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও অরাজকতা মেনে নিতে পারে না। তিনি অপরাধীদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ ঘটনায় সোমবার দেশের সব নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।
তিনি গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে সেনাদের অবদানের প্রশংসা করে বলেন, সরকার কোনো সহিংস উগ্র গোষ্ঠীকে আমাদের সেনাদের ক্ষতি করতে দেবে না।
অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে ঘটনাটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানান, যদিও তিনি পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতির প্রশংসা করেন।
তিনি আরো লেখেন, ‘এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না, দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
এদিকে, বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ও তাদের দায়মুক্তির সংস্কৃতির সমালোচনা করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইল আক্রমণের মধ্য দিয়ে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই পশ্চিম তীরেও সহিংসতা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: