ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২০ ০০:১৫

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২০ ০০:১৫

 

ঢাকা, ২৯ মে, ২০২০ (বাসস ডেস্ক): পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত রাতে বলেছেন, লিবিয়ার একটি শহরে কমপক্ষে ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করেছে একটি মানব পাচারকারী দলের সদস্যরা। এ ঘটনায় আরো ১১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
মোমেন বাসস’কে বলেন, ‘ত্রিপোলিতে থাকা আমাদের দূতাবাস নিশ্চিত করেছে যে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, গুরুতর আহত অপর ১১ বাংলাদেশীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিজদাহতে এ হত্যাকান্ড ঘটে। সেখানে একটি গোপন স্থানে ৩৮ বাংলাদেশী নাগরিককে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। তাদেরকে হত্যা করা শুরু করা হলে তাদের মধ্যে কেবলমাত্র একজন সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, প্রাণে বেঁচে যাওয়া ওই ব্যক্তি লিবিয়ায় বাংলাদেশ মিশনকে এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে অবহিত করেন।
মোমেন বলেন, প্রাণে বেঁচে যাওয়া ওই ব্যক্তি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বলেন, মানব পাচারকারী চক্রটি আরো অর্থের জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের নির্যাতন করছিল।
প্রাণে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি বলেন, মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে এ সময় তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হতো। একপর্যায়ে অপহৃতরা অতিষ্ঠ হয়ে মূল অপহরণকারী লিবিয়ান এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। এর জেরে অন্য দুস্কৃতকারীরা আকস্মিক তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বাংলাদেশ দূতাবাসের পত্রে বলা হয়, এ হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া ওই বাংলাদেশী নাগরিক লিবিয়ায় কার বাসায় অবস্থান করে মিশনের সাথে যোগাযোগ করেন তা জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
তিনি জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে মানব পাচারকারীরা কাজের সন্ধানে তাদের লিবিয়ার ত্রিপোলি শহরে নিয়ে আসার পথে তিনিসহ মোট ৩৮ বাংলাদেশি দুস্কৃতকারীদের হাতে জিম্মি হন। বাসসে’র হাতে পাওয়া ওই পত্রে এসব কথা বলা হয়।
একপর্যায়ে অপহৃতরা অতিষ্ঠ হয়ে ‘মূল অপহরণকারী’কে হত্যা করে। এর জেরে অন্য দুস্কৃতকারীরা আকস্মিক তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে।
বার্তায় বলা হয়, লাশগুলো বর্তমানে মিজদাহ’র একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সেখানে আহত বাংলাদেশীদেরও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বার্তায় আরও বলা হয়, মিজদাহ হাসপাতালের পরিচালক টেলিফোনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানান, নিহত ২৬ জনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
দূতাবাসের বার্তায় বলা হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত বাংলাদেশীদের ত্রিপোলি মেডিকেল সেন্টার (টিএমসি)-এর পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, ত্রিপোলি মেডিকেল সেন্টারে পৌঁছার পর দূতাবাসের পক্ষ থেকে আহতদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণসহ হতাহত প্রত্যেকের পরিচয় উদ্ঘাটন করা হবে। একই সঙ্গে আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে দূতাবাস থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
এর আগে লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গভমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ)-এর বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে এ হামলায় ৩০ অভিবাসীর নিহত হবার কথা নিশ্চিত করা হয়।
অভিবাসী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন (আইওএম) সাফা মিশেহলি’র লিবীয় নারী মূখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা জানায়, ‘আমরা মাত্রই এই হত্যাকান্ডের খবর জেনেছি এবং এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জেনে প্রাণে বেঁচে যাওয়াদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: