ঢাকা | শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

সাকলায়েন-পরীর চুমুর ভিডিও ফাঁস

Biplob | প্রকাশিত: ১১ আগস্ট ২০২১ ০৩:৫৫

Biplob
প্রকাশিত: ১১ আগস্ট ২০২১ ০৩:৫৫

আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক বেরিয়ে আসছে অজানা তথ্য। এবার ফাঁস হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন ও পরীমনির রোমান্টিক এক ভিডিও।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরী-সাকলায়েনের চুমুর ভিডিও পাওয়া গেছে। একটি ইউটিউব চ্যানেলে এই ভিডিওটি ফাঁস করা হয়। সেখানে দেখা যায়, সাবেক ডিবি কর্মকর্তা সাকলায়েন পরীকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটছেন। পরে পরীমনি তাকে কেকটি খাইয়ে দেন। এরপর পরী সাকলায়েনের ঠোঁটে চুমু এঁকে দেন।

এর আগে পরীমনি-সাকলায়েনকে নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হয়। সেখানে দেখা যায়, রাজারবাগ পুলিশ অফিসার্স কলোনির মধুমতি ভবনের গেটের সামনে ১ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে একটি সাদা গাড়ি এসে থামে। লাল রঙের টি-শার্ট পরিহিত একজন প্রথমে নামেন। এরপর কোলে একটি কুকুরসহ সাদা রঙের জামা পরে নামেন নায়িকা পরীমনি।

রিসিপশনে থাকা সদস্যদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে দুজন লিফটে প্রবেশ করেন। পরে গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি ট্রলি ব্যাগ। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর রাত দেড়টার দিকে ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমনির গাড়ি। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরীমনির পরনে ছিল কালো রঙের পোশাক।

পরীমনির গাড়িচালক নাজির জানান, সকালে গিয়ে আমি চলে আসছিলাম, আবার রাতে গিয়ে নিয়ে আসছি।

বনানীর বাসা থেকে যখন সাকলায়েন গেলেন তখন তিনি কী পরা ছিলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাকলায়েন সাহেব সিভিল ড্রেস (প্যান্ট-শার্ট) পরা ছিলেন।

এর আগেও হাতিরঝিল এলাকায় একই গাড়িতে তারা দুজন সময় কাটিয়েছেন, ঘোরাঘুরি ও মদপান করেছেন বলে জানান নাজির।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়, এমন অভিযোগ করার পর থেকে তার বিরুদ্ধেও আসতে শুরু করে একের পর এক পাল্টা অভিযোগ। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় তদন্ত। যে ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সাকলায়েন। আর এই তদন্ত করতে গিয়েই পরীমনির সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্কে’ জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনা যেন আজ সিনেমার গল্পকেও হার মানাচ্ছে।


ঘটনা ১ আগস্টের। সময় সকাল সোয়া ৮টা। রাজারবাগ অফিসার্স কলোনির মধুমতি ভবনের সামনে এসে থামে সাদা রঙের হ্যারিয়ার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫ ৯৬ ৫৩)। প্রথমে নেমে এলেন লাল টি-শার্ট পরিহিত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন। এরপর নামেন হালের আলোচিত নায়িকা পরীমনি। পরনে তার সাদা স্লিপিং গাউন। কোলে ছিল বাদামি রঙের তার প্রিয় কুকুর ‘কুটু’।

পুলিশ কর্তাদের বাসভবনের নিচে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে নিজের ফ্ল্যাটের চাবি নেন এডিসি সাকলায়েন। এর পর তারা দুজন লিফটে করে ওপরে উঠে যান। কেটে যায় দীর্ঘ সময়। রাত দেড়টায় ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমনির সেই গাড়ি। পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে সেখানে ঢোকেন চালক। একপর্যায়ে গাড়ি পার্কিং করে মোবাইলে শুনছিলেন গান। দায়িত্বরত এক নিরাপত্তা সদস্যের তাতে সন্দেহ হয়। তাই পরীমনির গাড়িচালকের কাছে আবার পরিচয় জানতে চান। চালক তখন নিরাপত্তা কর্মীকে বলেন, ‘পরীমনির সঙ্গে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিয়ে হয়েছে বলে তিনি জানেন।’ এর মধ্যে রাত সোয়া ২টার দিকে পরীমনি তার প্রিয় কুটু ও ট্রলিব্যাগসহ পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে নেমে আসেন। সকালের সাদা পোশাকের পরিবর্তে এ সময় নায়িকার পরনে ছিল কালো রঙের পোশাক আর পুলিশ কর্মকর্তার লাল টি-শার্ট হয়ে যায় সাদা।

আলোচিত সেই কর্মকর্তা, নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে পরীমনির দায়ের করা মাদক মামলার তদন্তের তত্ত্বাবধায়কও (সুপারভাইজার)। তাই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা দফতরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পরীমনির গাড়িচালক নাজির হোসেন অবশ্য জানিয়েছেন, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা এর আগেও আলোচিত এ নায়িকাকে নিয়ে মধ্যরাতে হাতিরঝিল এলাকায় গাড়িতে ঘুরেছেন। তিনি এও শুনেছেন যে, তারা বিয়ে করেছেন।
তবে পরীমনির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেন পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন। গত শুক্রবার রাতে তিনি বলেন, ‘বোট ক্লাবের ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলা তদন্তকালেই পরীমনির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয়। ওই নায়িকা কখনই আমার বাসায় আসেননি। আর পরীমনিকে আমি বিয়েও করিনি। এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। কে বা কারা এ কাজটি করছেন তা আমি জানার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে অবশ্য কথা বলতে চাননি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অন্য কোনো কর্মকর্তা। একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা ছাড়াও আরও কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে পরীমনির ঘনিষ্ঠতা রয়েছে কি না, সে বিষয়ে তথ্য নিতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় ডিবির সব ধরনের কার্যক্রম থেকে গোলাম সাকলায়েনকে অপসারণ করার কথা নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম।

বুধবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বনানীর বাসা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব। সে সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, নতুন মাদক এলএসডি ও আইস উদ্ধার করা হয়। এরপর মাদক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হলে এসব কথা স্বীকার করেন পরীমনি নিজেই।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: