odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 24th October 2025, ২৪th October ২০২৫

তিন প্রতিবন্ধির পাবনায় এএসসি পরীক্ষায় সাফল্য

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৩০ November ২০২২ ০৬:১৬

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৩০ November ২০২২ ০৬:১৬

পাবনা জেলায় মানব কল্যাণ ট্রাস্টের সহায়তায় এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এবার পাশ করেছেন তিন প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী। 

মানব কল্যাণ ট্রাস্ট সূত্রে জানা গেছে, মানব কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে লেখাপড়া করে এসএসসি পাশকরা তিন শিক্ষার্থী হলো- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার জালাল উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে আব্দুর রব আকন্দ এবং পাবনার সাঁথিয়ার মাহমুদপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে অন্তর হোসেন। 
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রবিউল ইসলাম দোগাছী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুর রব আকন্দ শহীদ ও অন্তর হোসেন শহীদ এম মনসুর আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
জন্ম থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রাজশাহীর বাঘা উপজেলার জালাল উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম। তবে ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি ছিল তার প্রবল আগ্রহ। ২০১৭ সালে পরিবার থেকে তাকে ভর্তি করা হয় পাবনার মানবকল্যাণ ট্রাস্টে। পঞ্চম শ্রেণি থেকে তিনি এখানে পড়ালেখা করেন। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় শ্রুতি লেখকের সহায়তায় অংশ নিয়ে তিনি জিপিএ ৩.৬৭ পয়েন্ট অর্জন করেছেন।
তার মতো রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে আব্দুর রব আকন্দ ৩.৬৭ পয়েন্ট এবং পাবনার সাঁথিয়ার মাহমুদপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে অন্তর হোসেন জিপিএ ২.৫০ পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তারা দুজন জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রবিউল ইসলাম বলেন, এক সময় পরিবারের অভাবের কারণে লেখাপড়া ছেড়েই দিয়েছিলাম। এরপর এই প্রতিষ্ঠানে এসে বিনাখরচে পড়াশোনা করছি। এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছি। খুবই ভালো লাগছে। কিন্তু শিক্ষাবোর্ড থেকে আমাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতির কোনো বই সরবরাহ করা হয়নি। তাই ব্রেইল পদ্ধতির বই সরবরাহের দাবি জানাচ্ছি।
রবিউল ইসলামের বাবা জালাল উদ্দিন বলেন, জন্ম থেকে আমার সন্তান দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। অভাব-অনটন ও নানা প্রতিকূলতায় এক সময় তার পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আমরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। এ সময় মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসাইনের সন্ধান পেয়ে এই মানবকল্যাণ ট্রাস্টে ভর্তি করে দিই। তখন থেকে সব খরচ এই ট্রাস্ট্রই বহন করছে।
পাবনা মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসাইন বলেন, শতাধিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের সহায়তায় ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন। এছাড়াও প্রায় ৬০ জনের মতো শারীরিক প্রতিবন্ধী এখানে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০০ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। তবে এ প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন ব্রেইল পদ্ধতির শিক্ষক হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম। গত বছর ১১ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিলেও এবার মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ব্যাপকভাবে এখানে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ দেয়া যাবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: