odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 5th November 2025, ৫th November ২০২৫

রোহিঙ্গা ইসু্তে চীনের নরম সুর ।

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২২ November ২০১৭ ১০:৩৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২২ November ২০১৭ ১০:৩৮


রাখাইন ‘`রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে চীন ,বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপে সহযোগিতা,
২০১৬ সালের ৩০ মার্চ সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি নির্বাচনে বিশাল জয়ের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়। অর্ধশতাব্দিরও বেশি সময় ধরে চলে আসা সামরিক শাসনের অবসানের পর ‘গণতান্ত্রিক’ সরকারের সাথে এটাই প্রথম কোন শীর্ষস্থানীয় চীনা কর্মকর্তার সাক্ষাৎ। মিয়ানমারের রাজধানীতে শুরু হওয়া ১৩তম এশিয়া-ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে রাজ্যের সংকটের টেকসই সমাধানে তিন ধাপের সুপারিশ করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। আসেম সম্মেলনের আগে মিয়ানমারের নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির সঙ্গে দেখা করে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া ঢাকার সংবাদ সম্মেলনে ওয়াংকে ‍উদ্ধৃত করে তখন জানায়: বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মিয়ানমার সফরে রাখাইন ইস্যু ছাড়াও সু চির সাথে অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে বেইজিংয়ের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ, যার লক্ষ্য এশিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশকে ভূমি এবং সমুদ্র পথে যুক্ত করা।মিয়ানমারের রাজধানীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: প্রথম সুপারিশ, সামরিক অভিযান বন্ধ করা এবং রাখাইনে শাসন ও স্থিতিশীলতা পুনঃস্থাপন করা। যাতে লোকজন পালিয়ে না যায় এবং শান্তিতে থাকতে পারে।চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অথচ এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, যা বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া ঢাকার সংবাদ সম্মেলনে ওয়াংকে ‍উদ্ধৃত করে তখন জানায়: বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মিয়ানমারের পক্ষ নিয়ে আসছে চীন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বা জাতিসংঘে মিয়ানমারের পক্ষে তাদের শক্ত অবস্থান সংকট সমাধানের পরিপন্থী হিসেবেই বিবেচিত।এর মাঝেই চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নতুন এই প্রস্তাব সংকট সমাধানে তাদের ইতিবাচক মনোভাবের বার্তা দিচ্ছে। সপ্তাহের শুরুতে বাংলাদেশ সফরকালেও তার বক্তব্য সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করেছিলো।

‘দ্বিতীয় ধাপ:- বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমতার ভিত্তিতে একটি সমাধানে পৌঁছানো। এ বিষয়ে সকল পক্ষেরই উচিত দুটি দেশকে উৎসাহিত ও সমর্থন করা’, ওয়াংকে উদ্ধৃত করে এমনটি জানায় এপি।
তৃতীয় ধাপে:- রাখাইনের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন: ‘‘প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও রাখাইন রাজ্যের উন্নয়ন পর্যাপ্ত নয়। এই অঞ্চলকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তিতে সহায়তা এবং বিনিয়োগ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাই। চীন এক্ষেত্রে সহায়তা করতে প্রস্তুত।এছাড়া মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং পৃথকভাবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাখাইন সংকটে মিয়ানমারকে সমর্থন দেওয়ার জন্য চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এই বর্মী জেনারেল।মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ফেসবুকে পোস্টে এক বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়: রাখাইন পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে পদক্ষেপ নিতে, আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা এবং মিয়ানমারের বর্তমান আইনের অধীনে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া ‘বাঙালিদের’ গ্রহণ করতে সেনাপ্রধানকে আহ্বান জানিয়েছেন ওয়াং ই।

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বরাবরই ‘বাঙালি’ বলে অভিহিত করে আসছে মিয়ানমার। যদিও বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে নিপিড়িত এই সম্প্রদায় হাজার বছর ধরে মিয়ানমারের অধিবাসী।‘রাখাইনের প্রকৃত পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ব্যাখ্যা করার বিষয়েও সেনাপ্রধানকে পরামর্শ দিয়েছেন ওয়াং ই। সামরিক সহায়তার মাধ্যমে কিভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা’, ফেসবুক পোস্টে জানায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ঢাকা সফর করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় তিনি বলেন: রাখাইন সংকটের সমাধান শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব, এর মাধ্য গ্রহণযোগ্য ‍চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে, যা টেকসই হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: